office-party-microsoft-MP900385582এমনটা নয় যে, উদ্যোক্তারা ছুটি উপভোগ করতে জানে না, আসলে ছুটির দিনে প্রতিটি মুহুর্তের যে আনন্দ তা হয়ত তারা উপলব্ধি করতে পারেন না। এমন নয় যে তাদের মধ্যে আনন্দ উদযাপনের কোন আবেগ নেই, আসলে অনেক সময় এই উৎসব তাদের জন্য অনেক বেশি দামী (costly) হয়ে যায়। কারন ব্যবসা কয়েকদিনের জন্য বন্ধ রাখতে হয়, মালামাল সময়মত এবং জায়গামত পৌছাতে দেরি হয়। ব্যবসা কিছুদিনের জন্য হলেও থেমে যায়। কারন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছুটিতে থাকেন। অনেক অনুষ্ঠান ও অনেক রীতি নীতি মানতে হয়। আর অবশ্যই এ ধরণের ছুটিতে (যেমন ঈদ) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বোনাস প্রদান করতে হবে। সব দিক থেকেই খুব আনন্দকর পরিবেশ। যদিও ব্যবসা মালিকদের এ জন্য তা বাড়তি খরচ গুনতে হবে।

 

তার পরেও ছুটি কাটানোর উপর কিছু টিপস নিচে দেয়া হল,

১। শুধু নিয়ম রক্ষা করার জন্য ই-মেল দিবেন নাঃ এ ধরণের ই-মেল কেউই গুরুত্ত সহকারে নেয় না। সবাই মনে করবে, আপনার একটা ডাটাবেস আছে এবং আপনি একটা টেম্পলেট নিয়ে সবাইকে গন ই-মেল করেছেন। এতে কোন ব্যক্তিগত ছোঁয়া নেই এবং এটা করতে আপনার খুব একটা কষ্টও করতে হয়নি। পুরনো নিয়মে ফিরে যান। কাগজের কার্ড নিন এবং ডাকে পাঠান। আপনি বা আপনার গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের দিয়ে সাক্ষর করান। যদি এটা আপনার জন্য অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যায়, তবে আপনি ই-মেলই পাঠান এবং মনে রাখবেন, তাতে যেন ব্যক্তিগত ছোঁয়া থাকে। আপনার ব্যক্তিগত কথা তাতে দিন, সস্তা কোন কিছু দিবেন না।

২। উৎসবের ক্ষেত্রে, ধর্ম নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করবেন নাঃ আপনি মুসলমান হতে পারেন কিংবা অন্য কোন ধর্মের। কিন্তু উৎসবের ক্ষেত্রে আপনি যে কাউকেই শুভেছা জানাতে পারেন। আপনি হয়ত হিন্দু নন, কিন্তু পুজার সময় আপনি পুজা মণ্ডপে গিয়ে, অন্যদের শুভেছা জানাতে পারেন। এটাতে যদি কারও কোন সমস্যা হয়, এটা তার ব্যক্তিগত ব্যপার। সেটা দিয়ে তার ক্ষুদ্র মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়।

৩। অফিস বা কমস্থল সাজিয়ে ফেলুনঃ আপনার অফিস হতে পারে খুব সিরিয়াস একটা জায়গা। সব জায়গায় রিপোর্ট, চার্ট ইত্যাদি ঝুলানো। একমাত্র উৎসবের সময়ই আপনি এর ব্যতিক্রম করতে পারেন। আর এটা সবাইকে ছুয়ে যাবে। অফিসকে সুন্দর করে উৎসবের মত করে সাজিয়ে তুলুন। আপনার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকেই এই দায়িত্ব দিন। এতে তাদের উৎসবের আনন্দ অনেকগুন বেড়ে যাবে। আপনি হয়ত সবার মধ্যে একই রকম সাড়া পাবেন না, তবে বেশীরভাগকেই অনেক আনন্দ দিবে। আপনার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অনেক বয়স্ক হতে পারে, তবে আনন্দ উৎযাপনের ব্যপারে তারা নিজেদের ভিতরে সবাই নয় বছরের বাচ্চার মতই।

৪। অফিসের মধ্যেই পার্টি করুনঃ অফিসের বাইরে অনুষ্ঠান আয়োজন করলে দেখা যায়, সবার ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছে। এরপর সবাই খাওয়া দাওয়া করে, যার যার মত চলে যাবে। প্রচুর খরচ এবং সময় ব্যয় করা ছাড়া এর তেমন কোন ফলাফল পাওয়া যায় না। আপনি এর বদলে অফিসে এক ঘণ্টার “আনন্দ ঘণ্টা” উৎযাপন করতে পারেন। যেখানে সবাই সবার সাথে মিশতে পারবে এবং আপনিও সবার উদ্দেশে উৎসব উপলক্ষে একটি বার্তা দিতে পারবেন।

৫। অফিস পার্টিকে সুন্দর করে আয়োজন করুনঃ প্রথমত অফিসে আয়োজন করুন, খাবারের ভালো ব্যবস্থা রাখুন, অফিসের সময়ের পরে আয়োজন না করে অফিস টাইমের মধ্যে, যেমন দুপুরে খাবার সময় আয়োজন করতে পারেন। বাইরের অতিথি না আনাই ভালো। অনুষ্ঠানটিকে সুন্দর ও আন্তরিক করে তুলুন এবং এর পরে আপনি সবাইকে ছুটি দিয়ে দিতে পারেন যাতে তারা বাকি সময় পরিবারের সাথে কাটাতে পারে। এটা তাদের জন্য একটা চমৎকার উপহারের মত কাজ করবে।

৬। উৎসবের সময় ব্যবসা পুরুপুরি বন্ধ রাখুন (যদি পারা যায়)। এটা হয়ত সব সময় সম্ভব হবে না, যেমন হসপিটাল, জরুরি সাধারন সেবা, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, পরিবহন ইত্যাদি ক্ষেত্রে এটা হয়ত সম্ভব হবে না। তবুও চেষ্টা করুন সবাইকে একটু বেশি ছুটি দিতে যাতে তারা সবার সাথে তা উৎযাপন করতে পারেন। এটা তাদের অনেক বেশি মোটিভেটেড রাখবে এবং ছুটি শেষে তারা অনেক বেশি উদ্দীপনা নিয়ে কাজে ফিরে আসবে। আর আপনি এই সময়টা আত্মীয় ও বন্ধুদের সাথে কাটান। এরপর আপনি সামনের সময়টা নিয়ে চিন্তা করতে পারেন, কিভাবে সামনের দিনগুলোতে আরও চৌকশ ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে? কিছু লক্ষ্য পুনর্বিবেচনা করুন। আপনি দেখবেন এই সময়টাতেই অনেক চমৎকার চমৎকার আইডিয়া পাওয়া যাবে।

৭। প্রদান করুনঃ হয়ত বছরের এই একমাত্র সময় যখন আপনি দিতে পারবেন এবং সবাই তাতে অনেক বেশি খুশী হবে। সবাইকে ধন্যবাদ জানান তাদের প্রতিদিনের অবদানের জন্য। সবাইকে কোন উপহার দিতে পারেন। বোনাসের সাথে এই অতিরিক্ত উপহার সবাইকে অনেক বেশি আনন্দিত করবে এবং আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আরও বেশি অনুগত করবে।

[অনুবাদ]

 

Similar Posts

Leave a Reply