কাজের উদপাদনশীলতা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন? কীভাবে না বলার মাধ্যমে আপনার কাজে মনোযোগ বজায় রাখতে পারেন সেজন্য এই গাইডলাইনগুলো অনুসরণ করুন।

মাঝে মাঝে মনে হয় যে করার মত কত কাজই না আছে কিন্তু হাতে সময় খুবই কম।

আপনি হয়ত এমনটা ভাবতে পারনে, কিন্তু সবসময় এটি সত্য নয়। হতে পারে আপনি নিজেকে সবখানে জড়িয়ে ফেলেছেন এবং এটিকে আপনি পরিবর্তন করতে পারেন।

কাজের উদপাদনশীলতা ও সময় বযবস্থাপনা সম্পর্কিত বেশ কিছু সাহায্যকারী টিপস রয়েছে, তবে আমি মনে করি এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হল কাজে না বলার ধরন।

এর মানে হতে পারেন আপনি নিজেকে না বলছেন, আপনার কর্মচারীদের না বলছেন, বন্ধুদের না বলছেন এবং হ্যাঁ, ক্লায়েন্টদেরকেও (মাঝে মাঝে)না বলছেন। মনে করে দেখুন তো আপনি কখনও কাউকে কোন কাজে হ্যাঁ বলার পর আফসোস করেছেন কিনা যার ফলে নিজের কাজের মূল লক্ষ্য থেকে আপনাকে বিচ্যুত হতে হয়েছে । যদি আপনি একটি ছোট্ট শব্দ উচ্চারণ করতেন তাহলে আপনার কত সময় আর ধকল বেঁচে যেত তা ভেবে দেখেছেন কী?

কিন্তু যখন আপনার মা আপনার সাথে কথা বলার জন্য দিনের মধ্য সময়ে যদি আপনাকে ডাক দেয়, তখন তাকে আপনি কীভাবে না বলবেন? বা যে ক্লায়েন্ট কোন অতিরিক্ত সম্মানী প্রদান ছাড়াই আপনি কোন প্রকল্পের আওতার বাইরে গিয়ে কাজ করবেন বলে আশা করে তাকেই বা না করবেন কীভাবে? কিংবা আপনার মাথায় যখন দারুণ কোন বুদ্ধি আসে, তখন আপনি নিজেকে না বলবেন কীভাবে যাতে অধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোতে আপনি মনোযোগ বজায় রাখতে পারেন?

একটি উপায় হলঃ না শব্দটি উচ্চারণ করা ছাড়াই আপনি তা বুঝিয়ে দিতে পারেন। আপনার জীবনকে আরো সহজ করার জন্য এখানে তিনটি সোজা গাইডলাইন দেওয়া হলঃ

. তাৎক্ষণিকভাবে কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন না।

আপনার কাজের মূল লক্ষ্যের বাইরে যখন আপনাকে কোন কিছু করতে বলা হয়, তখন সোজাসুজি বলে দিন যে আপনি এটি নিয়ে পরে ভেবে দেখবেন। হ্যাঁ বলার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে চিন্তা করার জন্য সময় নিন। আপনার লক্ষ্যগুলো নিয়ে ভাবুন এবং আপনার হ্যাঁ বলায় সেগুলোর উপর কী প্রভাব পড়বে তা চিন্তা করে দেখুন।

এটি যদি সাধারণ কোন অনুরোধও হয়ে থাকে, হতে পারে এর ফলে আপনি আপনার নিজের কাজে পিছিয়ে পড়বেন। এটা করা কী আদৌ ঠিক হবে? কোনকিছুকে না বলার অধিকার আপনার আছে, এবং যখন আপনি এর ফলাফল পেতে শুরু করবেন, তখন দেখবেন আপনি আরো সাবলীলভাবে ও নির্দ্বিধায় এই শব্দটি পরবর্তী সময়ে উচ্চারণ করতে পারছেন।

. সৃজনশীল সমাধানের উপায় নিয়ে চিন্তা করুন।

মাঝে মাঝে অন্যের কাছে ভাল হওয়ার জন্য আপনার অগত্যা হ্যাঁ বলে ফেলি। আপনি যদি না বলেন, তার মানে তো এই নয় যে আপনি ভাল মানুষ ননঃ এর মানে হল আপনার নিজস্ব কিছু অগ্রাধিকার ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যখন কেউ আপনার কাছে কোন একটি কাজের আবদার নিয়ে আসে এবং আপনি তাকে সাহায্য করার ইচ্ছা পোষণ করেন কিন্তু দেখতে পান যে এতে আপনার কর্মসূচি ব্যাহত হবে, তখন তাকে আংশিক হ্যাঁ বলা বা অন্য কোনভাবে সমাধান দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তা করে দেখুন।

কয়েক সপ্তাহ আগে, অল্প সময়ের মধ্যে আমাকে বলা হয়েছিল একটি দলের উদ্দেশে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য। আমার কাজটি করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু এর মাশুল কী হত তা আমার জানা ছিল। আমার নিজের উপদেশের উপর স্থির থেকে আমি দিন শেষে বৈঠক আয়োজকের সাথে কথা বলার আশ্বাস দিলাম। আমি দেখলাম যে আমার সময়সূচি থেকে আমি এই কাজটির জন্য আলাদা কোন সময় বের করতে পারব না বিধায় আমার একজন পরিচিতকে কাজটি করার জন্য বললাম এবং একজন সম্ভাব্য বক্তা হিসেবে তার নামটি সুপারিশ করার অনুমতি চেয়ে নিলাম। এরপর আমি বৈঠকের আয়োজককে ফোন করে এই বিকল্প উপায়ের কথা বললাম এবং তাকে আশ্বাস দিলাম যে আমি এর চেয়ে বরং জানুরারি মাসে অনুষ্ঠিব্য বৈঠকে বক্তব্য রাখব। না বলার মানে যে কখনও না তা কিন্তু না।

. ব্যাপারটিকে সরল রাখুনঃ কখনও অতিমাত্রায় ব্যাখ্যা করা বা ক্ষমা চাইবেন না।

আপনার এবং আপনার ব্যবসার জন্য যা সঠিক তার জন্য আপনার ক্ষমা চাওয়ার কিছু নেই। আপনি যদি বিনয়ের সাথে আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এবং সেই সাথে সহজভাবে আপনার অপরাগতা ব্যাখ্যা করেন তাহলে অনেকেই আপনাকে সম্মানের চোখেই কিন্তু দেখবে। নিজেকের অন্যের অবস্থানে চিন্তা করুন এবং সেই ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী কোন কথাগুলো বলা কার্যকর হবে তা ভেবে দেখুন। যদি তারা সরাসরি কথা বলা পছন্দ করে থাকে, তাহলে সংক্ষেপে সরাসরিভাবে আপনার মত প্রকাশ করুন; যদি তারা কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে থাকে, তাহলে একতু নরম হয়ে তাদেরকে আপনার মত জানিয়ে দিন।

মনে রাখবেন লম্বা ব্যাখ্যা ও অতিমাত্রায় ক্ষমা চাওয়া কোন কোন ক্ষেত্রে ভাল নাও হতে পারে, এর ফলে অন্য পক্ষ আপনার উপর আরো চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং আপনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য আপনাকে বাধ্য করতে পারে। পরিস্থিতি জটিল করে তুলবেন না; বিনয়ের সাথে না বলে দিন সাথে ছোট্ট ব্যাখ্যা (এক বাক্যে) জুড়ে দিন অথবা কোন সৃজনশীল সমাধান বাতলে দিন।

আপনার ভাল লাগার জন্য, আপনি কী কী অগ্রগতি করলেন তা একটি তালিকা আকারে লিপিবদ্ধ করুন। কাজের সময় যখন আপনার বন্ধুরা (বা আপনার মা) ফোন করে এবং আপনি তাদের ফোন না ধরে কতটুকু সময় বাঁচিয়েছেন তা লিখে রাখুন এবং পরবর্তীতে এমন এক সময় তাদেরকে ফোন দিন যখন উভয়ের মধ্য আলাপ করাটা সহজতর হবে। হুটহাট করে হ্যাঁ বলা থেকে বিরত থাকুন, এবং এক কিনবা দুই সপ্তাহ ধরে আপনি কতটুকু সময় বাঁচিয়েছেন তা খেয়াল রাখুন। অতি শীঘ্রই আপনি সাবলীলভাবে না বলার শক্তিকে কাজে লাগাতে সক্ষম হবেন!

Similar Posts

Leave a Reply