work_2332523bকাজের প্রতি আছন্ন বস আদতে কোম্পানির ক্ষতি করছেন না তো? আপনার কর্মচারীদের বিশ্বাস করুন এবং এর সুফল গুলো জেনে নিন।

মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে মেইল চেক করে যদি দেখেন অনেক নতুন অর্ডার এসেছে (আপনি ঘুমানোর পর থেকে), যদি চোখটি খোলা রাখা সম্বব হয় তাহলে আপনি নির্ঘাত বিদেশ থেকে আসা অর্ডার নিয়ে হিসাব করতে বসে যাবেন।

আপনি যখনই লিস্টের কথা চিন্তা করেন তখনি আপনার মস্তিষ্ক খুব দ্রুত কাজ করে। আর দশটা ব্যস্ত মানুষের মত, আপনি ঘুমানোর আগে যেই লিস্ট তৈরি করে রাখেন এটাই সেই লিস্ট। কিন্তু যখন কাজের সংখ্যা বেড়ে যায় আপনি তখন ক্লান্ত হয়ে পড়েন। কাজের কথা মনে রাখার জন্য আপনি এক কাজের কথা বার বার লিখে রাখেন যাতে আপনি ভুলে না যান। আপনার মস্তিষ্ক আচ্ছন্ন হয়ে থাকে পরদিন সকালে কি হবে এই দুশ্চিন্তায়। নতুন নতুন ঝামেলা কিভাবে সামলাবেন সেই চিন্তা আপনার মাথায় সবসময় ঘুরপাক খায়। এমনকি ঘুমের মধ্যেও আপনার শান্তি নেই। সবসময় সমস্যা আর তার সমাধান আপনার মাথায় ঘুরপাক খায়।

আপনি নিজেই কষ্ট করে, ক্রেতার ইমেইল চেক করেন, ফোন করে খোঁজ নিতে পারেন। সাধারণত কমপ্লেইনে ভরা এইসব মেইল দেখে নতুন অর্ডার পাঠানোর আগেই সব ঠিকঠাক করতে হয়।

এরপর হয়ত আপনি কিছুক্ষণ ঘুমাতে পারেন।

কালকে আপনার অনেক কাজ আছে, আসলে প্রতিদিনই আপনাকে হাজারো কাজ করতে হয়। আপনার কোম্পানি বড় হচ্ছে এবং খুব দ্রুত সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন আপনি। এবং সাথে সাথে দুশ্চিন্তা আর সমস্যা তার চেয়েও দ্রুত বাড়ছে আপনার জীবনে।

 

“সকল কাজের কাজী” হওয়ার পথে

কোম্পানি আর কর্মীদের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে আপনার ব্যস্ততা বাড়ছে। এখন আপনাকে ব্যবসার কাজ ছাড়াও আধা-ডজন নতুন কর্মচারীদের কাজ বুঝিয়ে দিয়ে তাদের কাছে থেকে কাজ আদায় করার ব্যাপারটাও দেখতে হচ্ছে – যেন আপনার রুমে নবীন বরণ অনুষ্ঠান চলছে সবসময়। একসাথে কাজ করা, আর দূরদৃষ্টি রেখে কাজ করার ব্যাপারটা সবাইকে বোঝানোটাও এখন আপনার দায়িত্ব।

সমস্যা সমাধানের আপনিই রাজা, আপনিই হলেন সকল কাজের কাজী। যার ফলশ্রুতিতে দিন শেষে আপনি খুবই ক্লান্ত। আপনি সেসব দিনের কথা চিন্তা করুন যখন আপনার চিন্তা করার, স্বপ্ন দেখার সময় ছিল। নতুন আইডিয়া আর কৌশল আপনার মাথায় ঘুরত। এরকম অনেক চিন্তা আর কৌশল হয়ত এখনও আপনার কোম্পানিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর বর্তমানে, হয়ত আপনার চিন্তা করার একমাত্র জায়গা – ওয়াশ রুম!

বিগত বেশ কয়েক বছরে আপনি শুধু সমস্যার সমাধান করেই দিন পার করেছেন। যাদের আপনি কাজে নিয়েছেন আপনাকে সাহায্য করার জন্য, তাদের সাহায্য করেই আপনার দিন পার হয়ে যাচ্ছে। কারণ আপনার ব্যবসার কাঠামো এমন যে এইসব কাজের দায়িত্ব আর কাউকে দেওয়া যাচ্ছে না।

 

হঠাৎ বোধোদয়

নতুনদের কাজের হিসাব নেওয়া আপনার দায়িত্ব নয়। তাদের প্রশিক্ষণ আর অগ্রগতির দিকে আপনি লক্ষ্য রাখবেন ঠিক কিন্তু এদের নিয়ে বেশি সময় নষ্ট করা যাবে না।

আপনার তিল তিল করে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানটিকে অন্য কেউ আপনার মত ভালোবাসবে না। এই কোম্পানির কখন কি দরকার, কিভাবে দরকার সেটা আপনারই সবচাইতে ভালো বোঝার কথা। আপনার চেয়ে কেউ বেশি যত্ন করবে না। এই কথা গুলো আংশিক সত্য।

ব্যাপারটা কিন্তু খুব জটিল কিছু নয়। কোম্পানির মালিক হিসেবে, একজন উদ্যোক্তা হিসেবে, এইসব ফালতু কাজ করে সময় নষ্ট করা আপনার উচিত নয়। আপনার কাজ কিভাবে কোম্পানি সবচেয়ে লাভবান হবে সেই চিন্তা করা। আসলে আপনি আপনার কোম্পানির ক্ষতি করছেন, আপনার সময় নষ্ট করে। নতুনদের কাজ বোঝানোর দায়িত্ব অন্য কাউকে দিয়ে আপনি নিজে ব্যবসার কৌশল ঠিক করুন।

এক সময় এসে আপনাকে এটা ছেড়েই দিতে হবে। দরজায় “ডু নট ডিস্টার্ব” সাইন লাগিয়ে দিয়ে আপন মনে কাজ করুন।

যদি আপনার কাছে কারোর কথা শোনার মতও সময় না থাকে, এখনি ব্যবস্থা নিন। নতুবা আপনাকে সারা জীবনই এইসব ছোট খাটো কাজ নিয়ে নাজেহাল হতে হবে।

[অনুবাদ]

Similar Posts

1 Comment

  1. প্রশংসনীয় লেখা

Leave a Reply