anxiety

আপনি কী মনে করেন যে দুশ্চিন্তা করলে আপনি আরো বেশি সজাগ হবেন? ওয়ার্টন ও হার্ভার্ডের গবেষণা কিন্তু ভিন্ন কথাই বলছে।

ব্যবসার নতুন শাখা খুলবেন নাকি বিদ্যমান ব্যবসাতেই বিনিয়োগ করবেন? নতুন সাপ্লাইয়ার কী আপনার জন্য আশীর্বাদস্বরূপ নাকি আপনার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার হাতিয়ার? প্রতিনিয়তই এ রকম অনেক কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখী ব্যবসা মালিকদের হতে হয়। এবং কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে গেলে দুশ্চিন্তা যে হবে তা বলাই বাহুল্য। এই দুশ্চিন্তা কীভাবে আপনার চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করে?

যারা আশাবাদী তারা হয়ত ভাবে দুশ্চিন্তা করলে তাদের ইন্দ্রিয় সচল থাকে এবং তাদেরকে সজাগ করে তোলে যার ফলে তারা প্রাসঙ্গিক সব তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারে। তবে ওয়ার্টন ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল দ্বারা পরিচালিত এক নতুন গবেষণা অনুযায়ী আশাবাদীদের এই আশা মাত্র অর্ধেক ক্ষেত্রে সত্যি।

বেশ কয়েকটি এক্সপেরিমেন্টে গবেষণা দল তাদের গবেষণার পাত্রদের বিভিন্ন মাত্রার আবেগীয় পর্যায়ে উন্নীত করে তাদেরকে কিছু কাজ করতে বলে। কয়েকজনকে শ্বাসরুদ্ধকর, দুশ্চিন্তা আনয়ন করে এমন মুভি ক্লিপস দেখানো হয় বা তাদের জীবনের উদ্বেগজনক সময়ের কথা মনে করতে বলা হয়। অন্যদেরকে একইভাবে রাগান্বিত হতে বলা হয় বা সামুদ্রিক জীবন নিয়ে প্রকৃতি বিষয়ক একটি নিরপেক্ষ ক্লিপ দেখানো হয়।

এতে দেখা গেছে দুশ্চিন্তাগ্রস্তরা অন্যদের পরামর্শ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে সমস্যা হল ঐ পরামর্শ তাদের জন্য ভাল হবে কিনা তা তারা বুঝতে পারে না। নলেজ@ওয়ার্টন এ ব্যাপারে লিখেছেঃ

সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ ফলাফলগুলো এটা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছে যে মানুষের ভাল ও খারাপ পরামর্শ যাচাই করার সক্ষমতার উপর দুশ্চিন্তা কতটা প্রভাব ফেলে। পূর্বের গবেষণায় যে লেখার কাজ এবং অন্যান্য কাজ ব্যবহার করা হয়েছিল এসব এক্সপেরিমেন্টেও সেগুলোই ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েকজনকে ভূল পরামর্শ দেওয়া হয় এবং অন্যদেরকে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হয়। যারা নিরপেক্ষ অবস্থায় ছিল তাদেরকে যখন অন্য কেউ সঠিক পরামর্শ দিয়েছে তারা সেটা গ্রহণ করার চেষ্টা করেছে, তবে যারা দুশ্চিন্তাগ্রস্তছিল, তারা তা করেনি। দুশ্চিন্তার ফলে মানুষের যে আবেগীয় মাত্রা থাকে তাতে ভাল-মন্দ বোঝার সক্ষমতা না থাকাটাই আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি বিস্মিত করেছে। যারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিল তারা ভাল ও খারাপ পরামর্শের মধ্যে তেমন কোন তফাতই করতে পারেনি।”

এই ফলাফল এটাও নির্দেশ করে যে দুশ্চিন্তা কতটা ক্ষতিকর হতে পারে। কোন কিছু গ্রহণ করতে সক্ষম আর সেটার বাছ-বিচার না করাটা মানুষের জন্য নেতিবাচক হতে পারে। সর্বশেষ এক্সপেরিমেন্টে গবেষকরা দেখেছেন যারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিল তারা পরামর্শ গ্রহণে বেশি আগ্রহী, এমনকি তাদের সাথে স্বার্থের সংঘাত আছে এমন ব্যক্তি থেকেও তারা পরামর্শ নিতে দ্বিধা বোধ করে না।

এখন মূল কথা হল, যখন আপনি দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত হবেন, তখন সম্ভাব্য সব অপশন সম্পর্কে জেনে রাখুন। তবে যখন আপনি শান্ত হয়ে যাবেন শুধুমাত্র তখনই এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে শুধুমাত্র শান্ত অবস্থাতে থাকার সময়েই বড় বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে কারণ তখন আপনি কোন রকম দুশ্চিন্তা ছাড়াই ভালভাবে বিষয়টি মূল্যায়ন করে এর কার্যকারিতা নিরূপণ করতে পারবেন।

Similar Posts

Leave a Reply