common-job-interview-mistake-3যে কোন পেশায় আবেদন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ইন্টারভিউ হল ‘হয় ভাঙো নয়ত মচকাও’ অংশ। আপনার জীবন-বৃত্তান্ত বা সিভি আপনাকে ইন্টারভিউ অবধি নিয়ে যেতে পারে, আর ইন্টারভিউ আপনাকে চাকুরী পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। আপনার সম্ভাব্য নিয়োগকর্তাকে আপনার‌ এমনভাবে খুশি করতে হবে যেন এই পদে আপনার চাইতে বেশি অন্য কাউকে  উপযুক্ত বলে মনে না নয়।

ইন্টারভিউতে আপনার টেক্কা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করুন।আপনি জানেন আপনার ব্যক্তিত্ব এবং ক্ষমতা অনুযায়ী  কি কি করা প্রয়োজন।এখানে ইন্টারভিউ সাফল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কোন কোন বিষয় থেকে বিরত থাকতে হবে তা উল্লেখ করা আছে।

 

মানানসই বেশভুষা:

ইন্টারভিউ এর জন্যে জন্য উপযুক্ত বেশভুষা পরিধান করুন। সর্বদা আপনি যেরকম পোষাক পরিধান করেন তার চাইতে রক্ষনশীল পোষাক পরিধান করুন। অত্যধিক খোলামেলা, বা খুব বেশী গয়না, অথবা অদ্ভুত রং যেন পরা না হয় তা নিশ্চিত করুন (পুরুষ বা মহিলা উভয় ক্ষেত্রেই)।

অপ্রস্তুত উত্তর:
সাধারণত ইন্টারভিউ এর প্রশ্নগুলো সম্পর্কে সবার জানা আছে, সুতরাং সেগুলো সম্পর্কে প্রস্তুতি গ্রহন করুন। আপনার সমসাময়িক প্রশ্ন এবং উত্তরগুলো জানার চেষ্টা করুন, “আপনার ক্ষমতা এবং দুর্বলতাগুলো কি কি?” “আগামী দশ বছরে আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে পছন্দ করবেন?” “আপনি এই কোম্পানিতে এমন কি আনতে পারেন যা অন্য কেউ করতে পারেন না বা যা অন্য কেউ পারবে না?” “আপনার ক্যারিয়ার এর কোন অংশটি আপনাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে?” উল্লেখিত এই প্রশ্নগুলো সাধারণত  বেশীরভাগ ইন্টারভিউতে করা হয়।

 

অপ্রস্তুত প্রশ্ন:
আপনার ইন্টারভিউ এর প্রশ্নগুলো সম্পর্কে যথাসম্ভব পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহন করা যতটা অত্যাবশ্যক, ঠিক ততটা অত্যাবশ্যক ইন্টারভিউতে আপনার নিয়োগকৃত পদের অবস্থান এবং কোম্পানী সম্পর্কে নিয়োগকর্তাকে করার জন্য প্রশ্ন প্রস্তুত করা। নিয়োগকর্তারা তাদের চাইতে এক ধাপ বেশি চিন্তা করে এমন প্রতিযোগীদের সম্পর্কে আগ্রহী। সুতরাং ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রশ্নকর্তাকে করার মতো কিছু প্রশ্ন তৈরী করে ফেলুন যেন ইন্টারভিউতে বসে এটা আপনাকে চিন্তা করে বের করতে না হয়।

 

গবেষণা করতে বিস্মরণ:
আপনি যদি এমন কোন অবস্থানে থাকেন যে একটি ইন্টারভিউতে অংশগ্রহন করতে যাচ্ছেন কিন্তু কোম্পানী সম্পর্কে কিছুই জানা নেই, তবে আপনি একটি ভুল করেছেন। ইন্টারভিউ এর পূর্বে নিয়োগকৃত পদের অবস্থান এবং কোম্পানী সম্পর্কে যতটা সম্ভব জেনে নিতে হবে। অতএব, আপনি কোম্পানী সম্পর্কে একটি বুদ্ধিমান এবং ওয়াকিবহাল আলোচনা রাখতে সক্ষম হবেন। এছাড়াও আপনি আরও ব্যাপকভাবে প্রশ্ন করতে পারবেন।

 

ভুল করে কিছু বলাঃ

এই ভুলগুলো নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হলেও, মানুষ প্রায়ই এগুলো করে থাকে।মানুষ দূর্ঘটনাক্রমে ভুল জিনিস বা ভুল ধারণা করে থাকে, কোন কোন ক্ষেত্রে কাউকে ছোট দেখানো অথবা হেয় প্রতিপন্ন করার মতো ভুলগুলো করে থাকে।এই ধরনের যেকোন একটি ভুল আপনাকে নিক্ষেপ করতে পারে ইন্টারভিউ এর বাইরে।সুতরাং যথাসম্ভব বুদ্ধিমত্তার এবং বিবেচনার সাথে সাথে আপনি যা বলছেন তার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।

 

মুঠো ফোন এর বাজনা:

আপনার ফোনটি বন্ধ কিনা ইন্টারভিউ এর পূর্বে তা নিশ্চিত করুন। ইন্টারভিউ এর সময় মুঠো ফোন এর বাজনা শোনার মতো বিরক্তিকর আর কিছুই নয়।

 

সময় পরীক্ষা করা:
ইন্টারভিউ এর মাঝখানে আপনার ঘড়ি বা দেওয়ালঘড়ি এর প্রতি নজর না দেওয়ার প্রতি সতর্ক থাকুন। সাক্ষাত্কারের পূর্বে আপনার ঘড়িটি বন্ধ করে নিতে পারেন যেন ইন্টারভিউ এর সময় দূর্ঘটনাক্রমে আপনার চোখ ঐদিকে না যায়।

 

খুব তাড়াতাড়ি বেতন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা:
ইন্টারভিউতে বেতন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা  করা উচিত নয়, এটা সম্ভবত আপনার সিদ্ধান্তের উপর নির্ণয় করা হয় একটি কোম্পানিতে কাজ করার সময়। অবশ্যম্ভাবীরূপে কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেতন এবং সুবিধা আপনাকে জানানো হবে। কাজ খুঁজছেন এমন অনেক মানুষ আছে। শুধু টাকা চায় এবং কোম্পানী বা পেশা সম্পর্কে গ্রাহ্য করে না কেউ হিসাবে যদি আপনি সূচিত  হন, তবে এটা দীর্ঘসুত্রিতায় আপনার বিরুদ্ধে কাজ করবে।

 

আপনার চাহিদা প্রদান:
ইন্টারভিউতে যদি এমন হয় আপনি বেকার ও চাকরী খুঁজছেন (বা চাকরির সুযোগ  খুঁজছেন), সেক্ষেত্রে আপনার কাছে কোনো চাবি নেই। অতএব, ইন্টারভিউতে আপনার কোন দাবী তুলে ধরা উচিত নয়। তারা আপনাকে উপহাস করবে এবং সম্ভবত আবার আপনি আর কল নাও পেতে পারেন। ব্যক্তিমাত্রই সহমর্মী সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে চান; সন্দেহজনক এবং  জটিল মানুষের সাথে না।

 

অন্যান্য কাজের প্রস্তাব সম্পর্কে বলা:
যদি আপনি ইচ্ছা পোষন করে থাকেন অন্যান্য কোম্পানি আপনাকে কি পজিশন প্রস্তাব করছে সে সম্পর্কে বলার, তবে সেটি হবে একটি হাস্যকর ইন্টারভিউ। এটাকে পৃথক রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তারা ভাবতে পারেন আপনি ইতিমধ্যে একটি কাজ পেয়েছেন বা অন্য কোথাও কাজ করছেন। তারা হয়ত এমন কাঊকে কেন চাকরী দিবে না যে একটি কাজ পেয়েছে বা অন্য কোথাও কাজ করছে।

 

অনেক নাম উল্লেখ:
এখানে এই “নাম” একটি ডবল নিরাপদ্ তলোয়ার হতে পারে। কাজের বাজারে যোগাযোগ যদিও গুরুত্বপূর্ণ, প্রায়শঃই তারা ভুল কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি নিশ্চয় এমন কাউকে দেখতে চান না যে কেবল তার সংযোগের দ্বারা নিজে পরিচিত হতে চায়। ।

 

সময়ানুবর্তিতা:
আপনার চাকুরীর ইন্টারভিউতে দেরী করবেন না। বরং, ১0-১৫ মিনিটে আগে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন যেন প্রথম আপনি স্থায়ীভাবে বসতে পারেন,  কাগজে কলমে পূরণ, এবং আপনার ইন্টারভিউ এর ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে পারে।

 

স্নায়বিক অস্থিরতায় ভোগা:
আপনি  চেষ্টা করবেন ইন্টারভিউ এর আগে এবং ইন্টারভিউ এর সময় স্নায়বিক অস্থিরতায় না ভুগতে। এটি বিক্ষেপী ও অস্থিরতা এবং উদ্বেগ তৈরী করে। কোন নিয়োগকর্তা একজন স্নায়বিক অস্থির সহকর্মী চান না।

 

মিথ্যা:

যদিও চাকুরীর ইন্টারভিউতে এটি কমন যে আপনার জীবনবৃত্তান্ত বিস্তারিতভাবে ব্যাখা করবেন, তথাপি কোন মিথ্যা তথ্য প্রদান করা নিতান্তই ভুল। সততা একজন কর্মীর সবচেয়ে বড় গুণমান এবং একজন নিয়োগকর্তা ইন্টারভিউত আপনার সত্য ও সততাকে সম্মান করবেন। আপনি কোথাও কাজ না করে থাকলে এই ধরনের কিছু আছে বলে দাবি করবেন না।

 

আমরা আশা করি এই সাধারণ টিপসগুলো চাকুরীর ইন্টারভিউ পর্বে আপনাকে সাহায্য করবে। ইতিমধ্যেই আপনি হয়ত একটি চমত্কার ইন্টারভিউ পর্ব অতিক্রম করেছেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সবসময় একটি ভালো ইন্টারভিউ নাও হতে পারে। এই ক্ষেত্রে, আপনাকে আপনার জীবনবৃত্তান্ত এবং তথ্যসূত্রের উপর ফোকাস করা আবশ্যক।

[অনুবাদ]

Similar Posts

1 Comment

  1. জোস ্‌এডমিনকে অনেক অনেক ধন্যবাদ । এত সুন্দর পোষ্ট দেয়ার জন্য ।

Leave a Reply