qualities-of-effective-leadersসবাই কিন্তু নেতৃত্ব দিতে পারে না বা চায় না। আপনি যদি একজন ক্ষমতাবান নেতা হতে চান এবং সবার প্রতি প্রভাব বিস্তার করতে চান, তাহলে এখানে দেওয়া ৬টি কাজ মেনে চলুন।

লেখক সেথ গডিন তার নতুন বই দা ইকারাস ডিসেপশন এ নেতা হবার কিছু কৌশল বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নেতা হতে গেলে নিজের ভেতরকার শিল্পকে অন্যদের কাছে ফুটিয়ে তুলতে হবে। তার কথার আলোকেই এখানে ৬টি টিপস তুলে ধরা হলঃ

১. নিজস্বতা গড়ে তুলুন

নিজের গন্ডির মধ্যে থাকলে সবাই তার নিজেরটা করে নিয়ে আসবে। শুধু যা করার দরকার মানুষ তাই করবে। তবে ক্ষমতাবান নেতাদের একটি নিজস্বতা থাকে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে তারা জনপ্রিয়, তারা তাদের নিজেদের ব্যাপারে সন্তুষ্ট এবং তারা তাদের চারপাশের মানুষদের জন্য একটি স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবেশ গড়ে তোলে। এভাবেই তারা অল্প বা বিনা বাধায় নিজের মত করে এগিয়ে যায়।

২. আপনার অনুসারীদের ব্যাপারে জানুন

বর্তমানের ইন্টারনেট ও তথ্য প্রযুক্তির যুগে অনুসারী পাওয়া আর তাদের নেতৃত্ব দেওয়া তেমন কঠিন কিছু নয়। শুরুতে একটি কথা মেনে নিন যে সবাই আপনার অনুসারী হবে না। আপনার যা প্রচার করবেন তা থেকে যারা উপকৃত হবে তাদের ব্যাপারে আগে জেনে নিন। আপনি বস হলেই যে একজন নেতাও হয়ে যাবেন এমনটা ভাববেন না। আপনার মতাদর্শ প্রচার করুন, দেখবেন আনাচে কানাচে থেকে আপনার মতের অনুসারী কাউকে না কাউকে আপনি পেয়ে যাবেন। তাদেরকে প্রেরণা দিন। অন্যদেরকে নিয়ে ভাববেন না। একথা সত্যি যে আপনি চাইলেও সবাইকে খুশি করতে পারবেন না। ক্ষমতাবান নেতারা তাদের মত করে এগিয়ে যায় এবং তারা জানে যে যোগ্য লোকেরা তাদের সাথে সময়ের সাথেই যোগ দেবে। শুধু আপনার আওয়াজ তুলুন যাতে অন্যরা আপনাকে খুঁজে পায়।

৩. যা জানেন তা থেকে বের হয়ে আসুন

আমরা কেউই সবজান্তা নই। বিখ্যাত আইনস্টাইন ও এডিসনকেও কিন্তু বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই তাদের আবিষ্কারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়েছিল। আজকাল জ্ঞান সবখানেই উপলভ্য। বর্তমান বিশ্ব ক্রমাগত পরিবর্তনশীল এবং আপনাকেও তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সবকিছুই শিখে নিন যাতে আপনি বুঝতে পারেন কোথায় সম্ভাবনা আছে আর কোথায় বিপদ আছে। প্রতিদিনই নিজের জ্ঞানকে কাজে লাগান এবং নিজেকে নতুন জ্ঞানের সাথে পরিচিত করে তুলুন। তাহলে আপনি আপনার নিজের একটি নতুন শিল্প গড়ে তুলতে পারবেন যা হবে সমসাময়িক ও সমাদৃত।

৪. নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করতে পিছপা হবেন না

ব্যর্থতা কষ্টদায়ক, বিব্রতকর, কঠিন, বিরক্তিকর, এবং মাঝে মাঝে বিধ্বংসী। এতকিছুর পরেও এটি ছাড়া সাফল্য ও উন্নতি অসম্ভব। সীমারেখা পর্যন্ত না গেলে নিজের সীমাবদ্ধতাকে জানা হয়ে উঠে না। আপনি নতুন কিছু শিখতে গেলেও প্রথমবারেই কিন্তু তা শিখতে পারবেন না। আপনাকে চেষ্টা করে যেতে হবে প্রতিনিয়ত। যেসব ব্যবসায়ীরা নিজেদেরকে নতুন কিছু শিখতে উদ্বুদ্ধ করে না তারা সব সময় তাদের প্রতিযোগীদের কাছে মার খেয়েই যাবে। সবকিছুতেই পন্ডিত হবার দরকার নেই, যা দরকার তাই শিখুন এবং নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করুন। ঝুঁকি নিন, নিজের কাজের পরিধি বাড়ান এবং পরবর্তীতে নিজের প্রচেষ্টার সুফল ভোগ করুন।

৫. নিজের দলের প্রতি অনুগত থাকুন

যদি আপনি আপনার অনুসারীদের কোন রাস্তায় পরিচালিত করতে না পারেন তাহলে অনুসারী রেখে তো কোন লাভ নেই। মানুষজন আপনাকে অনুসরণ করে কারণ তারা ভাবে আপনি তাদেরকে কোন একটি বিষয়ে আলোকিত করতে পারবেন। আপনার শিখার অভিজ্ঞতা ও কাজের সম্পর্কে আপনার অনুসারীদের সাথে শেয়ার করুন। তাদেরকেও আপনার কাজে অন্তর্ভুক্ত করুন। তাদেরকেও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে দিন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন, তাদেরকে স্বীকৃতি দিন এবং আপনার মতাদর্শের সাথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা দিন।

৬. সময়কে তার জাদুর খেলা খেলতে দিন

অনেকেই আছে তাদের সময়ের সাথে এমনভাবে পাল্লা দিয়ে ছোটেন যেন সময় তাদের শত্রু। কিন্তু যারা নেতৃত্ব দেন তারা সময়কে ব্যবহার করেন পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে। নতুন আইডিয়া গ্রহণ করতে ও নতুন কর্ম্পরিকল্পনা অনুযায়ী মানুষদের কাজ করতে কিন্তু সময় লাগে। যে কেউই একজন নেতার শিষ্য হতে পারে কিন্তু বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হতে সময় আর একাগ্রতা লাগে। একটি ঘটনা থেকেই কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব হয় না, বরং একাগ্র চিত্তে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমেই তা হয়ে থাকে। ধৈর্য ধরুন এবং এর আশীর্বাদকে গ্রহণ করতে অভ্যস্ত হয়ে নিন।

[অনুবাদ]

Similar Posts

Leave a Reply