670px-Be-Likable-Step

এরা অন্যদের মুগ্ধ করে তাদের নিজস্বতা দিয়ে এবং সবার মুখে হাসি ফোটাতে পারে।

কারো সাথে প্রথম দেখা হলে, কেমন আছেন, আপনি কী করেন, এগুলো বলার পর আর নতুন কিছু বলার থাকে না। প্রথম আলাপের প্রথম ৫ মিনিট একটু কঠিন মনে হতে পারে কারণ তখন আপনি হয়ত একটু লাজুক থাকবেন। আপনি একটি ভাল ইম্প্রেশন তৈরি করতে চান এবং আপনি চান মানুষেরা যেন সত্যিকার অর্থেই আপনাকে পছন্দ করে। সেজন্য আপনাকে জানতে হবে পছন্দনীয় মানুষেরা কী কী করে থাকে। এখানে সেগুলো তুলে ধরা হলঃ

তারা ক্ষমতার বড়াই করে না

আপনার মা-বাবা আপনাকে শিখিয়েছে যে সটান হয়ে দাঁড়াতে হবে, দৃঢ়তার সাথে কদম ফেলতে হবে, কন্ঠকে নমনীয় করতে হবে এবং জোর দিয়ে হাত মেলাতে হবে। নন-ভার্বাল উপায়ে আত্মবিশ্বাস দেখানোতে ক্ষতি নেই তবে বেশি বেশি করতে গেলে তা মাঝে মাঝে দৃষ্টিকটু হয়ে যায়। তখন অন্যরা ভাববে আপনি আপনার নিজেকে নিয়েই পড়ে থাকতে ভালবাসেন আর এই ব্যাপারটি কেউই পছন্দ করবেনা। যখন বড় কেউ তার স্ট্যাটাস ভুলে অন্যের সাথে আন্তরিকভাবে কুশল বিনিময় করে সেটা আরো বেশি আকর্ষণীয়। পরের বার কারো সাথে দেখা হলে এগিয়ে যান, তার প্রতি মাথা একটু নিচু করে করমর্দন করুন, হাসুন এবং দেখান যে আপনিই তার সাথে দেখা করতে পেরে উচ্ছ্বসিত। যারা আমাদের পছন্দ করে আমরাও তাদেরকে পছন্দ করি। আপনি যদি দেখান যে আপনি অন্য ব্যক্তিকে পছন্দ করেন তাহলে সেও আপনাকে পছন্দ করবে।

তারা স্পর্শকে গুরুত্ব দেয়

স্পর্শ কিন্তু যথেষ্ট শক্তিশালী। স্পর্শ দ্বারা আচরণ প্রভাবিত হতে পারে, হৃদতা সৃষ্টি হতে পারে এবং যে স্পর্শ করে তাকে বন্ধুসুলভ বলেই মনে হয়। স্বাভাবিক থাকুন এবং অন্য ব্যক্তির বাহুর উপরাংশে বা ঘাড়ে হাত রাখতে পারেন। ব্যাপারটিকে ক্যাজুয়াল রাখাই শ্রেয়। পরের বার আপনার পরিচিত কাউকে পেছন থেকে তার ঘাড়ে হাত রেখে দেখতে পারেন। তখন অন্য মানুষটি বুঝবে আপনি তাকে আন্তরিকভাবে গ্রিট করছেন। স্পর্শের মাধ্যমে আপনার আর অন্য ব্যক্তির মাঝে শারীরিক দূরত্ব দূর হয় এবং পছন্দনীয় হওয়ার পথ সুগম হয়।

তারা তাদের সামাজিকতার দক্ষতা প্রদর্শন করে

এমন অনেকেই আছে যাদের সাথে একটু কথা বলার পর ভাল লাগে ঠিকই কিন্তু পরে দেখা যায় যে ঐ আলাপচারিতা ছিল অর্থহীন। যারা অন্যদের কাছে পছন্দনীয় তারা সামাজিকতার দক্ষতায় পটু। তারা আপনার সাথে কথা বলার সময় আপনার মুখ থেকেই আপনার ব্যাপারে কথা বের করে আনবে এবং আপনি তা টেরও পাবেন না। তারা আপনার সাফল্যে আগ্রহ দেখাবে এবং সে ব্যাপারে আপনার কাছ থেকে জানতে চাইবে। তারা সামাজিকতার দক্ষতা দিয়ে আপনাকে মোহাবিষ্ট করে রাখতে সক্ষম এবং এজন্যই তারা অন্যদের কাছে পছন্দনীয়। সঠিক প্রশ্ন করতে পারলে সবকিছুই সহজ। মনকে ওপেন রাখুন এবং কী, কেন, কীভাবে – এগুলো জানতে চান। কাউকে জানা থাকলে তাকে জিজ্ঞেস করুন কেন সে অমুক কাজ বা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সে কী শিখেছে সেখান থেকে। সঠিক প্রশ্ন করার মাধ্যমে আপনি যে অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করছে সেটাই প্রকাশ পায়। আর যারা আমাদেরকে শ্রদ্ধা করে আমরা তাদেরকে সহজেই পছন্দ করি।

তারা শুদ্ধতার উপর জোর দেয়

সবাই আপনার থেকে কোন না কোন কিছুতে ভাল হবে আর এটাই স্বাভাবিক, তাই এটি মেনে নিন। কখনও অন্যকে জোর করে জানার প্রতিযোগিতায় গা ভাসাবেন না। প্রতিযোগিতায় জেতার থেকে হেরে যান। আন্তরিক থাকুন। অন্যের প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করুন। দুর্বলতা থাকলে তা স্বীকার করে নিন। আপনার গোপন সিক্রেট বলার দরকার নাই। অন্য ব্যক্তি যদি কোন অর্জনের কথা বলে তাহলে সেটার প্রশংসা করুন। নিজেকে কিছুটা দুর্বল হিসেবে তুলে ধরতে ভয় পাবেন না। কৃত্রিমতায় মানুষ সাময়িকভাবে মুগ্ধ হলেও মানুষ কিন্তু কখনও শুদ্ধ ব্যক্তিত্ব ভুলে যায় না। নিজের নিজস্বতা বজায় রাখুন। তখন মানুষ আপনাকে আপনার জন্য পছন্দ করবে।

তারা অন্যের কাছে কিছু চায় না

আপনি কারো সাথে কথা বলছেন, দুজনের মাঝে কমন বিষয় উঠে আসল আর সেই সূত্র ধরে আপনি চিরাচরিত নেটওয়ার্কিং শুরু করে দিলেন। তখনই কিন্তু আপনার ইন্টার‍্যাকশানের সবকিছু পাল্টে যাবে। চিরাচরিত নেটওয়ার্কিং ভাব পরিহার করুন। যদি আপনার কিছু জিজ্ঞেস করার থাকে,তখন আগে অন্য ব্যক্তিকে কোন কিছুতে সাহায্য করে তারপর আপনার চাওয়া তুলে ধরুন। যারা অন্যদের কাছে পছন্দনীয় তারা সব সময় অন্যদের প্রতি গুরুত্ব দেয়।

তারা আন্তরিকভাবে কথা শেষ করে

কথা শেষ হবার পর আপনি গতানুগতিক ভাবে বললেন, “আপনার সাথে দেখা হয়ে ভাল লাগল” তারপর ঘুরে চলে গেলেন, এতে কোন লাভ নেই, মানুষ আপনাকে তৎক্ষণাৎ ভুলে যাবে। এর পরিবর্তে দেখার শুরুতে যা করেছিলেন তাই করুন, আবার হাত মেলান। অন্য ব্যক্তির ঘাড়ে বা বাহুতে বন্ধুসুলভ স্পর্শ করে বলুন যে আপনি আসলেই তার সাথে দেখা করতে পেরে উচ্ছ্বসিত। এটি বলার সময় হাসিমুখ থাকুন। সেলসম্যানদের মত হাসবেন না, আপনার নিজের হাসি হাসুন। প্রথম এবং শেষ ইম্প্রেশন দুটোই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

 এবং তারা মানে যে কোন কিছুই সহজ নয়

এসব পড়ে আপনার মনে হতে পারে যে এগুলো করা সহজ। কিন্তু এগুলো সহজ নয় যদি আপনি লাজুক প্রকৃতির হয়ে থাকেন। আপনি হয়ত গতানুগতিক হাই, হ্যালো, বাই নিয়মে অন্যদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন কিন্তু এতে কিন্তু আপনি তাদের কাছে পছন্দনীয় হয়ে উঠতে পারবেন না। তাই মেনে নিন যে এগুলো করা সহজ নয়। একটু বেশি আন্তরিক হওয়া, একটু বেশি শুদ্ধতা দেখানো, নিজেকে একটু দুর্বল করে তোলা প্রথম প্রথম অবশ্যই সহজ নয়। তবে ঘাবড়াবেন না। যখন আপনি অন্যদেরকে সাহায্য করা শুরু করবেন, তখন তারা এমনিতেই আপনাকে পছন্দ করতে শুরু করবে।

Similar Posts

Leave a Reply