আত্ম-সচেতনা সবার জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বিশেষ করে এক্সিকিউটিভ আর শিল্পপতিদের জন্য। বাস্তবতার মুখোমুখী না হওয়ার ব্যর্থতা আপনার ক্যারিয়ার এবং কোম্পানিকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

কাউকে উপদেশ দেওয়াটা কিন্তু কোন খেলা নয়। এটা এমন না যে আপনি একটি পাহাড়ের চূড়ার উপর বসে আপনার ক্লায়েন্টদের উপর উপদেশ বাণী বর্ষণ করবেন। এক্সিকিউটিভ আর শিল্পপতিদের জন্য বিষয়টা অতটা সোজা নয়।

ধরে নেওয়া যেতে পারে যে কিছু কিছু সময় মানুষ অভিজ্ঞতার আলোকে এবং হয়ত কিছুটা নিরেপক্ষতা সহকারে আপনার মূল্যায়ন গ্রহণ করবে। তারপর এর ঠিক বিপরীত চিত্রও আছে: কঠোর অস্বীকৃতি যখন তারা কোনক্রমেই সত্য শুনতে রাজি থাকে না আপনি যাই বলুন বা যেভাবেই বলুন না কেন।

আর এই সাদা-কালোর মাঝে রয়েছে এক ধূসর জায়গা যেখানে মানুষেরা তাদের কী করতে হবে তা ঠিকই জানে কিন্ত কোনকিছু তাদেরকে তা করা থেকে বিরত রাখছে। এই কোনকিছুর ব্যাপারটা কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যে কারোর মধ্যেই চাপা পড়ে থাকে যার ফলে এটি নিয়ে কাজ করা সহজ নয় এবং মানুষেরা যেকোন প্রচেষ্টাকে যেভাবেই হোক প্রহিহত করতে চাইবে।

সত্যি বলতে গেলে মানুষ যা থেকে পালিয়ে থাকতে চায় তার জন্য সে অনেক পন্থাই অবলম্বন করতে পারে। এবং এই পন্থাগুলো অনেক  সময় ক্যারিয়ারের অপমৃত্যু বা ব্যবসা ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এটি হসির কোন কথা নয়।

যখন আমরা নিজেদেরকে বাস্তবতার থেকেও বেশি আত্ম-সচেতন ভাবি এবং পরিপূর্ণ যোগাযোগ ও বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে বাধার দেয়াল তৈরি করি, তখনই মাঝে মাঝে আমরা আমাদের করণীয় থেকে সরে দাঁড়াই। কিছু ক্ষেত্রে এটি তেমন বড় কোন ব্যাপার হয়ে উঠে না। তবে অন্য ক্ষেত্রে, এটি কিন্তু বড় আকার ধারণ করতে পারে। এরকম বড় পরিস্থিতি বোঝার জন্য এখানে ৭টি লক্ষণ তুলে ধরা হল।

আপনি অন্যদেরকে শাসিয়ে থাকেন। আবেগ ছাড়া মানুষ হওয়া যায় না। আমাদের অনুভূতিই আমাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পথ দেখিয়ে থাকে। রাগ এবং আগ্রাসী মনোভাবও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের মধ্যে কোন হুমকি বা ভয় কাজ করলে এই লক্ষণ দুটো প্রকাশ পায়। এর ফলে আপনি নেতিবাচকতাকে গ্রহণ করে আপনি অন্যদেরকে দেখাতে চান না এমন লুকায়িত কোনকিছুকে যেমন কোন দুর্বল অনুভূতি বা দুর্বলতা রক্ষা করতে আপনি অন্যদেরকে অহেতুক শাসানো শুরু করেন। বৈপরীত্যপূর্ণ ব্যাপার, তাই না?

আপনি আত্ম-রক্ষামূলক প্রকৃতির।  যখন প্রধান এক্সিকিউটিভরা পরিচালকদের একক সাক্ষাতের বাইরে কোন পরামর্শক বা এক্সিকিউটিভ কোচকে তাদের কর্মচারীদের সাথে দেখা করতে বাধা দেয় যেখানে সঠিক ও নিরপেক্ষ প্রতিক্রিয়া আদান-প্রদানের বিষয়টি তাদের বিরক্তি বা ক্রোধের কারণ হয়ে উঠে, তখনই এই লক্ষণটিকে বুঝে নিতে হবে। কে জানে কেন এটিকে আত্ম-রক্ষামূলক প্রকৃতি বলা হয়, কারণ যারা আত্ম-রক্ষামূলক প্রকৃতির হয়, প্রায়শই তারাই আক্রমণাতক হয়ে উঠে।

আপনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন।  যখন আপনি ছোট-খাটো ব্যাপারগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন, তখন স্বভাবতই আপনার মধ্যে থাকা বড় সমস্যাটিকে আপনি এড়িয়ে চলতে চাইছেন। এর মানে হল আপনি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে নজর দিচ্ছেন না। এটির খেয়াল রাখা না হলে অবশ্যই তা আপনার জীবনের এক অন্ধকার অধ্যায় ডেকে নিয়ে আসবে।

আপনি পরোক্ষভাবে আক্রমণাতক।  যখন আপনি বলেন, “জ্বী, এটা কোন ব্যাপার না”, তারপর ঘুরে গিয়ে ঠিক তার বিপরীত কাজটাই করেন, তখন এর মানে হল আপনি অন্যদের সম্মুখীন হতে বা তাদের দ্বারা বিষয়টির মোকাবেলা করতে চাইছেন না। এটি এক ধরনের বিচ্যুতি এবং অন্যদেরকে দূরে ঠেলে দেওয়ার প্রয়াস যাতে আপনাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে এমন কিছু নিয়ে আপনাকে ভাবতে না হয়। আবার এটি সাধারণত এমন কিছ যার ব্যাপারে আপনি সজ্ঞানে সচেতন নন, এমন কিছু যা আপনাকে দুর্বল বা বিব্রত করে দেয়।

আপনার আচরণগত পরিবর্তন।  আপনাকে জানে বা আপনার সাথে কাজ করে এমন মানুষদের কাছে যখন আপনার আচরণগত পরিবর্তনগুলো চোখে পড়ে, তখন বুঝে নিতে হবে যে আপনি আসলেই কোনকিছু দ্বারা বিরক্ত এবং তা যে আপনার মুডকে প্রভাবিত করছে যে ব্যাপারে আপনি সতর্ক নন। যদি এই ব্যাপারে কেউ আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং আপনি আত্ম-রক্ষামূলক হয়ে উঠেন, তাহলে লক্ষণটির ভয়াবহতা বুঝে নিতে হবে।

আপনি বাগাড়ম্বরপূর্ণ।  যখন আমাদের আইডিয়া, পরিকল্পনা, ব্যবসা নিয়ে আত্ম-বিশ্বাসের সাথে উচ্চবাচ্য করি, যখন আমাদের কৌশলগুলো নিরপেক্ষ যুক্তিকে পাশ কাটিয়ে যায় বা আমাদের লক্ষ্যগুলো পরীক্ষিত নয়, তখন এই লক্ষণটিকে বুঝে নিতে হবে যে আমরা বেশি বেশি করছি এবং মনে করছি যে সবকিছু নিয়ন্ত্রেওণের মধ্যেই রয়েছে। কয়েকজন বাগাড়ম্বরপূর্ণ সিইও দের পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে যে তারা যদি এই ব্যাপারটি ঠিক না করেন, তাহলে ফলাফল কখনও শুভ হয় না।

আপনি অজুহাত সৃষ্টি করেন।  অজুহাত তা সে যেকোন ধরনের অজুহাতই হোক না কেন হল নেতিবাচক দৃষ্টি আকর্ষণকে এড়িয়ে যাওয়া বা তা থেকে বিচ্যুত হওয়ার পন্থা। জবাবদিহিতা এড়াতে অন্যদের দিকে আঙুল উঠানো এবং দোষারোপ করা হল সাধারণ কৌশলমাত্র। এজন্য একে অপরকে দোষারোপ করা হল অকার্যকর নেতৃত্ব বা ব্যবস্থাপনার একটি সুস্পষ্ট লক্ষণ। এবং এরকম কিন্তু আমরা প্রায়ই আমাদের চারপাশেহতে দেখি, তাই না?

Similar Posts

Leave a Reply