happy-at-work-illustrationনিজের কর্মক্ষেত্রেকে আরো বেশি আনন্দময় করে তোলা খুব কঠিন নয়. শুধু আপনার এর নিয়ম গুলো  জানা  প্রয়োজন। নিয়ম গুলো নিণ্মে দেয়া হলোঃ

 

১। নিজেকে অন্যদের সাথে তুলনা করবেন নাঃ

যদিও আমরা সবাই একে অন্যের থেকে আলাদা তবুও আমরা অন্যদের সাথে নিজেদেরকে তুলনা করি। কর্মক্ষেত্রে কখনই অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করা উচিত নয়। তবুও এটা মানুষের প্রকৃতি। যখন আমরা ক্যরিয়ারে অন্যদের কাছ থেকে শেখার এবং নিজেকে  তৈরী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করি তখন আমরা নিজের ইমেজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলি এই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসে নিজেকে জড়িয়ে।

 

২। যা আপনার নিয়ন্ত্রণে নেই তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবে নাঃ

যদিও বিবিধ বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ (যেমন- অর্থনীতি, বাজার জ্ঞান ইত্যাদি) আপনার ফোকাস থাকা উচিত যা আপনার নিয়ন্ত্রণে আছে যেমন আপনার নিজস্ব চিন্তাধারা ও আপনার নিজের কর্ম। আর যা আপনার নিয়ন্ত্রণে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবে না।

 

৩। আপনার ব্যক্তিগত সীমানা এবং পরিধি সম্পর্ক সজাগ থাকুনঃ

কখনও কখনও আপনার কাজ আপনার কাছে আপনার বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মত মনে হতে পারে, কিন্তু আপনি যদি কাজকে আপনার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং সততার বিরুদ্ধে দাড় করিয়ে দেন, তা আপনাকে ধ্বংস করে দিবে।

 

৪। নিজের বা নিজের দলের হয়ে অতিমাত্রায় কমিটমেন্ট করবেন নঃ

কাজের প্রতি উত্সাহী এবং একটু বেশি উদ্যম দেখানো ভালো, কিন্তু অতিমাত্রায় প্রতিশ্রুতি যদি আপনি বা আপনার টিম না রাখতে পারেন, তবে তা শুধুই ব্যর্থতা এবং হতাশা তৈরি করে দিবে।

 

৫। মনে রাখবেন কাজ করার জন্য আপনি বাকি সবার মত প্রতিদিন একই পরিমাণ সময় পাবেনঃ

আপনার মনে হতে পারে যে আপনার কাজের সময় সংক্ষিপ্ত এবং আপনার মনে হতে পারে যে আপনার আরো বেশী সময় প্রয়োজন। কিন্তু সত্য হলো দিনের শুরু থেকে সবার মত আপনিও আপনার কাজের জন্য ২৪ ঘন্টা সময় পাচ্ছেন। কেউ আপনার চেয়ে একটুও বেশী সময় পায় না যা নিয়ে আপনার অভিযোগ থাকতে পারে।

৬। সবকিছুই সিরিয়াসলি নিবেন না, কেউই সবকিছু সিরিয়াসলি নেয় নাঃ

আপনার হাসি খুশি থাকার ক্ষমতা শুধুমাত্র আপনাকে সুখী করে তুলবে না বরং আপনাকে আরো প্রভাবশালী এবং অন্যদের কাছে আরো আকর্ষণীয় ব্যক্তি হিসেবে শক্তিশালী করে তুলবে। আপনি নিজেকে উপহাস করতে না পারলে বাকি সবাই আপনার পিছনে পিছনে হাসতে থাকবে।

 

৭। আরও বেশি করে দিবাস্বপ্ন দেখুনঃ

বিংশ শতাব্দীর একটি অবিচ্ছেদ্য ধারনা হল, দিবাস্বপ্ন এবং কাজ এই দুটি একটি অন্নতির পরিপূরক। আপনি যত আপনার চিন্তাশক্তিকে নতুন নতুন বিষয়ে নিমগ্ন করেতে পারবেন, আপনার ততই ব্যতিক্রম এবং চৌকশ হতে পারবেন।

 

৮। কোন কাজ ঘৃণা বা বিরক্ত দিয়ে করবেন নাঃ

কোন কাজ ঘৃণা বা বিরক্ত দিয়ে করবেন না, তাহলে তা আপনার কাজের জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না। ঘৃণা আপনার শক্তি ও কাজের একাগ্রতা নষ্ট করে ফেলবে। যদি কিনা আপনি কোন ভুল দেখেন আর তা শুধরাতে পারেন তাহলে তা পরিবর্তন করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আর যদি আপনি পদক্ষেপ নিতে না পারেন, তাহলে তা ক্ষমা এবং ভুলে যাওয়াই ভাল।

 

৯। আপনার ভবিষ্যতের দিকে মনোনিবেশ করুনঃ

আপনার অতীতের ভুলের উপর বেশি মনোযোগ দিলে ব্যপারটা হবে ঠিক রিয়ার ভিউ মিরর দেখে গাড়ী চালানোর মত। আপনার উচিত হবে ভবিষ্যতের কথা মনে রেখে যতক্ষণ পর্যন্ত কাঙ্খিত অর্জন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সামনের দিকে এগিয়ে চলা।

 

১০। প্রত্যেক যুক্তি “জয়” করার চেষ্টা করবেন নাঃ

কিছু যুদ্ধ জয়ের জন্য নয় তবুও অনেক মানুষ আছে যারা যুক্তি দিয়ে জিততে চায়। জয়ী হওয়াটি জরুরী না, কিন্তু যেখানে আপনি এবং অন্যান্য ব্যক্তিরা জড়িত রয়েছে, সেখানে পরবর্তী পরিকল্পনা করাই ভাল।

 

১১। মনে রাখবেন আপনি ছাড়ে অন্য কেউ আপনার সুখী জন্য দায়ী নাঃ

যদিও কিছু কিছু কাজের প্রকিতিই কঠিন, তবুও আপনি যদি ক্রমাগত ব্যর্থ হতে থাকেন, তাহলে এটা হয়ত আপনার ব্যর্থতা। এর দায় দায়িত্ব নিজের কাঁথে এমন একটি কাজ খুঁজে বের করুন যা আপনাকে খুশী রাখবে এবং আপনি তাতে অনেক উন্নতি করতে পারবেন।

১২। সব সময় হাসি এবং আনন্দে থাকুনঃ

হাসি এবং আনন্দ ভালো থাকার ফলাফল না, বরং তারা একটি চক্রের মত। একটি অন্যটি তৈরি করে এবং আনন্দে থাকতে সাহায্য করে। হাসি-খুশি থাকার উপলক্ষ বের করুন এবং হাসার কোন উপলক্ষ হাতছাড়া করবেন না।

 

১৩। গল্প গুজব করে নিজের মূল্যবান শক্তি নষ্ট করবেন নাঃ

আপনি অন্য কারো সম্পর্কে একটি গল্প বলার আগে অথবা শোনার আগে চারটি প্রশ্নের নিজেকে জিজ্ঞাসা করুনঃ এটা কি সত্য? এটি  কি বিষয় ভিত্তিক? এটা কি প্রয়োজনীয়? এবং আমি কি অনুরূপ একটি  গল্প কাউকে বলব?

 

১৪। আপনার সম্পর্কে অন্যরা মনে কি চিন্তা করে তা গুরুত্বপূর্ন নয়ঃ

আপনার সম্পর্কে অন্যরা মনে কি চিন্তা করে তা নিয়ে আপনার এটা আপনার চিন্তা করে আপনি শুধু আপনার সময় নষ্ট কছেন। আপনি কারো মন পড়তে  পারবেন না। সত্যিই, কেউ  আপনার সম্পর্কে কি চিন্তা করলো তা আপনি বের করতে পারবেন না তাই এটা নিয়ে সময় নষ্ট করা মানে আপনার সময় এবং শক্তির নষ্ট করা।

 

১৫। মনে রাখবেন অবস্থা যতই খারাপ অথবা ভাল হোক না কেন এটা অবশ্যই পরিবর্তন হবেঃ

মহাবিশ্বের সব প্রকৃতি পরিবর্তনশীল।  কোন কিছুই একই অবস্থানে থাকে না। তাই অবস্থার পরিবর্তন হবেই।আপনি কোন কিছু উদযাপন করছেন বা শোক পালন করছেন, সবকিছুই চলে যাবে।

 

১৬। কর্মক্ষেত্রে আবর্জনা কখনই উপকারী বা সুন্দর নয়ঃ

একবার চিন্তা করুন। আপনি আপনার দিনের এক তৃতীয়াংশ বা তার বেশি সময় আফিসে থাকেন। তাহলে কেন আপনি আপনার কাজের পরিবেশ বা জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ আজে বাজে ব্যপার দিয়ে পুরন করবেন।

 

১৭। বিশ্বাস করুন শ্রেষ্ঠ কাজটি এখন করা হয়নি তা যাই হোক না কেন?

আপনার  বয়স ৭০ বছর হলেও  আপনি আবার কলেজে ফিরে যেতে পারেন, বিশ্ব ভ্রমন শুরু করতে পারেন, জাপানি চিত্রাঙ্কণ শিখেতে পারেন, করতে পারেন আরোও অনেক কিছু। তাই মনে রাখবেন আপনার শ্রেষ্ঠ কাজটি এখন করা হয়নি।

[অনুবাদ]

Similar Posts

Leave a Reply