নিজের কর্মীবাহিনীকে শক্তিশালী করতে চান? এখান থেকে শুরু করুনঃ

কী করলে তারা তাদের কাজকে ভালবাসবে তা জানুন

এমনও হয় যে মাত্র দুই-তিন জন ফুলটাইম কর্মাচারীর সাহায্যে একটি প্রতিষ্ঠান ৬৪ বছর ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে । প্রতিষ্ঠানের সব মূল কাজগুলো যেমন – পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন, কোন আয়োজনের দেখভাল করা, প্রতিষ্ঠানে নথি ও ওয়েবসাইট আপডেট করা, কাজের পরিধি দেখা – কর্মীরা নিজেরাই সামলে নেন। এরপরেও যদি প্রতিষ্ঠানের আরো লোকবলের প্রয়োজন হয়, তখন তা সম্মানীর বিনিময়ে কোন ভলান্টিয়ার বা ফ্রিল্যান্সারের সাহায্য গ্রহণ করতে পারেন, বাড়তি কাজের চাপ সামাল দেওয়ার জন্য। মাঝে মাঝে ভলান্টিয়ার ছাড়া একটি প্রতিষ্ঠানের কাজ সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

আপনি যদি কোন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি স্বভাবতই বুঝতে পারবেন যে ক্ষমতা প্রয়োগ করে কাজ আদায়ের চেয়ে কাজটি নিজে এবং এর প্রভাব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে মাঝে আপনাকেও বিভিন্ন সময়ে এগিয়ে আসতে হয় সমস্যা সমাধানের জন্য যেখানে হয়ত আপনাকে বুদ্ধিদীপ্ত, স্বাধীনচেতা বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে নাছোড়বান্দা ফ্রিল্যান্সারদের সাথে কাজ করতে হতে পারে। আপনি অবশ্যই চাইবেন সবাই মিলে এমন কাজ করুক যাতে আপনার প্রতিষ্ঠানই লাভবান হয়। আপনি যার সাথে কাজ করছেন তার ব্যাপারে  তিনটি সহজ প্রশ্ন প্রেরণা দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে।

. সে ই কেন এখানে এসেছে / এই কাজটি করছে?

যদি কাজটি হয় কোন চেক সংগ্রহ করার মত ছোট পরিসরের, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে এই প্রশ্নটি অবান্তর। অফিসের কর্মচারীদের ব্যাপারে এ ধরনের  অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায় যে, তারা নাকি সকালে অফিসে আসে ঠিকই কিন্তু নাস্তা খেতেই তাদের নাকি আধা ঘন্টা লেগে যায়। আপনি হয়ত ভাবতে পারেন যে এ আর এমন কী! হয়ত ভাবছেন এরকম তারাই করে যারা একটি ছোট প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের ভবিষ্যত ভাবনা ছাড়াই ঘন্টা হিসেবে অদক্ষ কর্মী হিসেবে কাজ করে কারন তাদের মধ্যে হয়ত তাদের বসকে খুশি করার তেমন কোন লক্ষ্য থাকে না।

এখন কর্মচারীদের আরেকটু উদ্বুদ্ধ করতে আপনি কি করতে পারেন? মালিক বা নিয়োগকর্তাতা হিসেবে আপ্রনার কাছে তারা  কি চেয়েছিল এবং কী আশা করেছিল তা জানলেই হয়ত ব্যাপারটি সহজ হয়ে যেত। হয়ত তাদেরকে অধিকতর প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান বা কাজের লক্ষ্য নির্ধারণে দায়িত্ব দেওয়া এবং সেসব লক্ষ্য পূরণের ফলশ্রুতিতে পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা – তাদেরকে প্রেরণা যোগাতে পারত।

 

. তার কোন চাওয়াগুলো আমি পূরণ করতে পারব?

এই প্রশ্নের উত্তর কাউকে মর্যাদা সহকারে সবার মাঝে তুলে ধরার সাথে সম্পর্কিত। যদি আপনি কাউকে সবার সামনে তারিফ করতে পারেন বা তাকে পুরো টিমের উদ্দেশ্যে কিছু বলার সুযোগ করে দিতে পারেন, তাহলে হয়তো ভাল হবে। আবার আপনার প্রতিষ্ঠানের হয়ে যেসব ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করছে তাদের মধ্য থেকে নিবেদিত কয়েকজনকে আপনি বোর্ড মিটিংয়ে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন যাতে তারাও তাদের মতামত তুলে ধরতে পারে। এর ফলে যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে এবং একটি গুরত্বপূর্ণ বার্তা প্রেরিত হবে আর তা হলঃ  তারা যা করছে সে ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব (প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সিধান্ত দানকারী) জানতে আগ্রহী।

. আমি কী তাকে কাছে দায়িত্ব সহকারে কাজ হস্তান্তর করতে পারি?

যখন কেউ নিজ দায়িত্বে কাজ করে তখন সে তার সর্বোচ্চটাই দেওয়ার চেষ্টা করে। এজন্য গুরত্বপূর্ণ কাজগুলো যোগ্য লোকদের হাতে তুলে দিতে হবে আপনাকে এবং তাদেরকে তাদের মত করে কাজ করতে দিতে হবে। তারা চাইলে আপনি তাদেরকে সহায়তা করতে পারেন, কিন্তু তাদের কাজে খবরদারি করার প্রয়োজন নেই, তবে আপনি কাজের অগ্রগতির ব্যাপারে নিয়মিত প্রতিবেদন চাইতে পারেন।

ফলে আপনি প্রথমে কাজটিকে যেভাবে দেখেছেন বা চেয়েছেন যেভাবে কাজটি নাও করা হতে পারে। তখন আপনাকে একটু সময় নিয়ে ভাবতে হবেঃ আপনার চাওয়ার বিনিময়ে যাকে আপনি কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন, তার থেকে সেই দায়িত্ব তুলে নেওয়াটা কতটুকু যুক্তসঙ্গত হবে? আবার মাঝে মাঝে উল্টোটিও হতে পারে যে, আপনি যেভাবে কাজটি নিয়ে ভেবেছিলেন, অন্যজনের ভাবনাটা আপনার থেকেও ভাল।

আপনি হয়তো ভাবছেন সম্মানীর বিনিময়ে কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে থাকেন বলে তাদেরকে ইচ্ছে হলেই আপনি বরখাস্ত করতে পারেন বা তাদের উপর প্রভাব খাটাতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেনঃ পরবর্তীতে বছরগুলোতে যোগ্য দক্ষতা সম্পন্ন কর্মচারী পাওয়া আপ্ন্র জন্য হয়তো অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়বে। বেশিরভাগ মানব সম্পদ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা এমনটাই বিশ্বাস করেন। হয়ত সময়ের সাথে সাথে তারা অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ বের করে নেবে।

এখন আপনি তাদের জন্য কী ধরনের বিকল্প দিতে চান?

Similar Posts

Leave a Reply