elegant-leader

অনেক নেতাই নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য শক্তিশালী আর ধূর্ত হওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অন্যভাবেও অর্জন করা সম্ভব।বেশিরভাগ নেতা অতিরিক্ত কর্তৃত্ব ফলানোর মাধ্যমে নিজের সব ক্ষমতা প্রয়োগ করে নিজেকে জাহির করতে চায়। একজন সুরুচিশীল নেতা হওয়ার জন্য এতো কষ্ট করার প্রয়োজন নেই। রুচির পরিবর্তন নেতৃত্বের উৎকর্ষতা সাধনে মুখ্য ভূমিকা রাখে।

কিভাবে একজন মার্জিত বা অভিজাত নেতা হবেন?

মার্জিত বা রুচিবোধসম্পন্ন নেতা হওয়ার জন্য আপনাকে কিছু জিনিস বাদ দিতে হবে। নেতারা নিজেদের প্রশ্ন করে যে, “ আমার কোম্পানি থেকে কোন কোন বিষয়গুলো বাদ দিলে আমার লোকেরা খুশি হবে?” এবং “আমি কোন কাজ বাদ দিলে আমার প্রতিদ্বন্দ্বীরা সবচেয়ে অখুশি হবে?”

এটা খুবশক্ত একটা কাজ, কারণ স্বভাবগতভাবে মানুষ কাজ বাড়াতে চায়। আমরা জমাতে ভালোবাসি, এবং নেতারাও ঠিক একই কাজ করেন নিজের কোম্পানি বাড়ানোর সময়। এরপর যখন দেখা যায় যে আগের থেকে এখন বৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে তখন গিয়ে টনক নড়ে। সময় থাকতে জঞ্জাল সাফ করুন।

কি ধরনের জিনিস বাদ দিবেন?

যেসব ব্যাপার আপনার কোম্পানি আর কর্মীদের কাজ কে জটিল আর সময়সাপেক্ষ করে সেগুলো প্রথমেই বাদ দিন। নেতারা নিয়ম আর কাঠামো খুব পছন্দ করে, কিন্তু কাঠামো আর নিয়মের উপর বেশি জোর দিলে দেখা যায়, কাজ করাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ছোট কোম্পানিগুলো এজন্য বড়গুলোর চেয়ে কম ঝামেলার হয়, কারণ তাদের কাঠামো ছোট।

কাকে আপনি মার্জিত বলবেন।

মার্জিত কোন পন্থা বলতে বোঝায় যেটা সর্বনিম্ন ঝামেলার পোহানোর পর আপনাকে সর্বোচ্চ ফলাফল এনে দেবে। আপনি যদি গুগোল এর হোম পেইজে যান তবে দেখবেন তাতে লেখার একটা জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই, কিন্তু এর কার্যক্রম বিশ্বসেরা।

নেতৃত্বের সাথে গুগোলের কি সম্পর্ক?

অভিজাত বা মার্জিত নেতাদের সাথে সহজেই কথা বলা যায় বা যোগাযোগ রাখা যায়। তারা কোন কিছু নিয়েই বাড়াবাড়ি করেন না। তাদের অপচয়ের অভ্যাসও থাকে না। তারা সহজ প্রশ্নের সহজ উত্তর দেন। আপনার কোম্পানি সম্পর্কে সহজ ভাষায়, প্রতিদিন অর্থপূর্ণ কিছু বলুন।

প্রতিদ্বন্দ্বীদের ব্যাপারে কি করণীয়?

আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীরা এই ব্যাপারটা সহজে মেনে নিতে পারবে না, যে আপনি নিজে আপনার সব জঞ্জাল ফেলে দিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। গুগোলের কর্মীরা খুবই বিপদে পড়ে যাবে যদি মাইক্রসফট তাদের দামী দামী অকেজো সব ফিচার বন্ধ করে দেয়।

রুচিশীল নেতৃত্ব কার্যত কি রকম হয়?

এটা অনেকটা কারাটে আর আইকিডো-এর পার্থক্য যেমন সেরকম। কারাটে আসলে মারামারি, লাথি ঘুষির কারবার। শক্তির মোকাবেলা হয় শক্তি দিয়ে।

আর আইকিডো হল, শত্রুর শক্তিকে নিজের সুবিধার জন্য ব্যবহার করার উপায়। এটা হল শক্তির বিপরীতে বুদ্ধির খেলা। আপনি আইকিডো দেখলে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন যে, আইকিডো মাস্টার খুব কমই নড়াচড়া করছে, কিন্তু প্রতিপক্ষ খুব কসরত করছে। এটা হল বাইরের শক্তিকে নিজের কাজে ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার উপায়। পৃথিবী দিন দিন জটিল হচ্ছে, সব কাজে চ্যালেঞ্জ বাড়ছে, আপনি এর থেকে কিভাবে বের হবেন? কাস্টমারদের কাছে কিভাবে গোপন রাখবেন এগুলো?

নেতাদের কি অমার্জিত কিছু করতে বলা হয়?

দ্রুত জবাব দেওয়া একজন বলিষ্ঠ নেতার বৈশিষ্ট। কিন্তু কখনও কখনও চুপচাপ বসে থাকতে হয়। এরা আপনার ব্যবসাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে চাবে। যখন অনেক চাপে পড়ে যাবেন, তখন কিছু করার চেয়ে কিছু না করাও অনেক সময় ভালো কাজে দেয়।

কিছু না করা অবশ্যই ক্ষতিকর।

আপনার যদি ভালো পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা আর সেই অনুযায়ী কাজ করার যোগ্যতা থাকে, তবে বসে থাকলেও সমস্যা নেই। পশ্চিমা বিশ্বে খুব অল্প সময়ে কাজ করতে হয়, ১০ দিনের বিক্রির হিসাব, মাসের হিসাব সব কিছু সময় সময় করে রাখতে হয়। পূর্বাঞ্চলে আবার ধীরে কাজ হয়। আগে আপনি পর্যবেক্ষণ করুন সমস্যাটা, ক্রেতা, কর্মী, ব্যবহারকারী সবার দিক থেকে এই সমস্যাটা নিয়ে চিন্তা করুন। এরপর সিদ্ধান্ত নিন। তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে যাবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।

একজন মহান নেতা হওয়া কি সম্ভব?

স্টিভ জবস কি একজন মহান নেতা ছিলেন? অবশ্যই তার গুণ ছিল। উনি কিভাবে এত বড় মাপের একজন নেতা হলেন তা ঠিক আন্দাজ করা যায় না। একজন মহান নেতা, একটা কাজে দক্ষ হয়ে কাজটা বার বার করে দক্ষতার উন্নতি সাধন করে। তার কাছে যেই কাজটা সঠিক মনে হয় সেটা সম্মানজনকভাবে সম্পাদন করেন। নিখুঁত হওয়ার জন্য যে চেষ্টা, আর একই সাথে কাজের মর্ম বোঝার মাধ্যমেই উন্নতি সম্ভব। যদি কোন জিনিস আমাদের পাওয়ার আশা না থাকে তবে তার জন্য আমরা কেন খাটবো? কারণ এটা আমাদের করতেই হবে। জবস এটাই করেছিলেন।

নেতাদের সব সময় যোগাযোগ রক্ষা করতে বলা হয়। অতিরিক্ত যোগাযোগ কি অমার্জিত কোন আচরণ?

আপনাকে দেখতে হবে কার কাছ থেকে এই উপদেশ আসছে। কিছু নেতা কথাই বলেন না ঠিকমত। গবেষণায় দেখা গেছে, একেবারে চুপ করে থাকা আর বেশি বকবক করা দুটোর একটাও কার্যকরী নয়। মধ্যম পন্থা অবলম্বন করুন। যখন যেটুকু দরকার, কথা বলুন। আপনার কর্মীদের কাজে উৎসাহ দিন।

[অনুবাদ]

Similar Posts

Leave a Reply