ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সাফল্য সঠিক সম্পর্ক তৈরি করার উপর নির্ভরশীল। নতুন সহকর্মী, কর্মচারী, ক্রেতা, বন্ধু, অংশীদার – যেই হক না কেন, এমন সম্পর্ক যে আপনাকে সম্ভাবনার দিকে নিয়া যাবে। তবে অনেকের কাছের আসল সম্পর্কের চেয়ে অনেক বেশি মানুষের সাথে পরিচয় গড়ে তোলাই মূখ্য হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু অনেকের কাছেই এটা শুধু পরিচয়ের চেয়ে অনেক বেশি কিছু।
আমরা যে পৃথিবীতে থাকি তা হয়ত শুধু বেশি মানুষের সাথে পরিচয় হওয়া আর তা রক্ষা করার উপরেই বেশি জোর দেয়। আমরা বেশি ভাগ সময় যা করি তা হল, বরশি ফেল, আটকাও এবং দুবে থাক। জার ফলে, আমরা দৌড়াই এমন সব অনুষ্ঠানে যেখানে আমরা বেশি বিজনেস কার্ড দিতে পারবো এবং তার পরে রাত জেগে জেগে নতুন নতুন মানুষদের লিঙ্কইড ইনে জগ করা আর মাঝে মাঝে কিছু টুইটার পোস্ট দেয়া জাতে নিজের কিছু জনপ্রিয়তা বাড়ানো যায়।
তবে আমরা অনেকেই সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে ভুল পন্থা অবলম্বন করে থাকি। সংযোগ তৈরি করার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত যোগাযোগ, সেখান থেকে কিছু শেখা এবং আমাদের থেকে ভিন্ন এমন মানুষদের সাথে পরিচয় গড়ে তোলা যারা আমাদের চিন্তাধারাকে প্রশস্ত করবে। সাধারণত যাদের সাথে আমাদের ঘনিষ্ঠ সংযোগ থাকে তারা সবাই কমবেশি আমাদের মত। ভালমত সংযোগ তৈরি করতে চাইলে যারা আমাদের থেকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে, যারা ভিন্ন প্রশ্ন করার সাহস রাখে, ভিন্নভাবে কল্পনা করতে জানে এবং আমাদের চিন্তাধারাকে চ্যালেঞ্জ করে তাদের সাথেই সখ্য গড়ে তুলতে হবে। কার্যকরী সংযোগ গড়ে তোলার ৭টি টিপস এখানে দেওয়া হলঃ
১. গ্রাহকদের বেশি কিছু দিতে হবে এটা মেনে নিন।
আপনার কাছে সবকিছুর উত্তর থাকবেনা এটা স্বাভাবিক। হয়ত আপনার বিজনেসের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তবুও এর আসল সম্ভাবনা চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
২. নিজের সীমাবধধতা জানুন এবং খোলামেলা আলোচনা করাকে প্রাধান্য দিন
আপনার টিমের কর্মীদেরকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে উৎসাহিত করুন এবং নিজেদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে নতুন নতুন উত্তর খোঁজার জন্য তাগাদা দিন।
৩. নতুন আইডিয়া ও অনুপ্রেরণার জন্য সময় দিন
বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সফর করতে আপনার কর্মচারী ও সহকর্মীদের অনুরোধ করুন। এরপর সেসব প্রতিষ্ঠানের লোকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে উৎসাহিত করুন, তারা হয়ত এমন কিছু জানে যা আপনি জানেন না।
৪. আপনার বিজনেস উন্নত করতে প্রতিষ্ঠানের বাইরের মেধাকে কাজে লাগান
গুরুত্বপূর্ণ খবরাখবর জানতে বিজ্ঞান ও ইতিহাসের জাদুঘর পরিদর্শন করুন, আর্ট গ্যালারি ঘুরে আসুন এবং চিত্রশিল্পীদের সাথে বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলুন, আপনার পাড়া-মহল্লায় বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নিয়ে দেখুন সবাই কী নিয়ে আগ্রহী, আপনার কাজের বাইরে কোন বিষয় নিয়ে লেকচারের যোগ দিন এবং নতুন নতুন পরিবেশনায় অংশ নিন, নতুন নতুন সৃজনশীল বিষয়ের সম্পর্কে জানুন।
৫. অন্য পেশার নতুন মানুষদের সাথে পরিচিত হন, তাদের আপনার প্রতিষ্ঠানে আমন্ত্রন জানান এবং তাদের কাছ থেকে আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পরজে জানুন।
এরপর আপনাকে এবং আপনার কর্মচারীদের চিন্তা করতে বলুন কিভাবে অন্যদের চিন্তা থেকে আপনারা নতুন কিছু শিখতে পারেন এবং নতুন ভাবে চিন্তা করতে পারেন।
৬. ভাগ্য মেনে নিন এবং যেকোন সম্পর্কের সম্ভাবনার উপর ভরসা রাখুন
নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া যায় এমন স্থানে নিজেকে নিয়ে যান এবং নতুন মানুষদের সাথে কথা বলুন। পথ জানা না থাকলে অচেনা কাউকে জিজ্ঞেস করুন। রাস্তায় কারো সাহায্যের দরকার হলে এগিয়ে যান। নিজেই হ্যালো বলে তার সাথে কথা বলা শুরু করুন।
৭. আপনার সহকর্মীরা যাতে একে অপরের সাথে সময় কাটিয়ে ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে সেদিকে নজর দিন
এই প্রক্রিয়াতে আপনি আলাপ-আলোচনার শক্তিশালী পরিবেশ গড়ে তুলবেন যা সবাইকে একসাথে সৃজনশীল হতে উদ্বুদ্ধ করবে।