idea-plan-action1
১. নমনীয়তা
শত্রুর সাথে যোগাযোগ না করে কোন পরিকল্পনা টিকতে পারে না – জার্মান ফিলড মার্শাল হেলমুথ ভন মল্টকের এই উক্তি বাস্তব সত্য। স্টার্ট আপের নেতাদের নমনীয় হতে হবে এবং তাদের বিজনেস এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তাদের পরিকল্পনা পরিমার্জন [বা বর্জন] করার মানসিকতাও থাকতে হবে। এবং এটা করার জন্য তাদেরকে রাগ হলে চলবে না, তাদেরকে চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ও অপমানিত বোধ করা চলবে না। নেতার এহেন আবেগ প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।

২. বিনয়
যখন প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে পড়ে তার দায়িত্ব নেতার উপরেও বর্তায়। প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে কর্মচারীদেরও অবদান থাকে। কর্মচারীদের আপনি আপনার ইগোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন না। যদি আপনি কোন প্রতিষ্ঠান চালান, তাহলে আপনার কর্মচারীরা আপনার গ্রাহক হিসেবেই বিবেচিত হবে এবং আপনার উচিত হবে নিজের চাহিদার পরিবর্তে তাদের চাহিদা পূরণে সাহায্য করা।

৩. ফোকাস
নেতা হিসেবে আপনার বিনিয়োগ, সময় ও শক্তি – সবকিছুর সামাল দিতে গিয়ে আপনি হিমশিম খাবেন এটাই স্বাভাবিক। আপনি হয়ত বিজনেস সংক্রান্ত সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতাতে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চাইবেন। আর সবকিছুই জন্যই ফোকাস থাকা অত্যাবশ্যক। যেসব কাজ আপনার বিজনেসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোতে আপনার বেশি সময় ও শক্তি ব্যয় করা উচিত। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো নির্ধারণ করে সেগুলোতেই মনোনিবেশ করাটাই শ্রেয়।

৪. সিদ্ধান্ত নেওয়া
যারা স্টার্ট আপ নেতা হিসেবে সফল তারা জানে যে প্রতিদিন তাদের বিজনেস সংক্রান্ত যে শত শত সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা হয় তার সবগুলো বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই। এর পরিবর্তে তাদের কাজ হল পর্যাপ্ত তথ্য জোগাড় করা এবং তার ভিত্তিতে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যা তাদের বিজনেসকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এর মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত হয়ত ভাল হবে না কিন্তু ঐসব ভুল সিদ্ধান্ত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে পুনরায় চেষ্টা করতে হবে। সিদ্ধান্তহীনতার চেয়ে এটাই করা উত্তম।

৫. একাগ্রতা
নতুন প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো কোন সহজ কাজ নয়। যেকোন উদ্যোক্তাই কঠিন সময়েও কাজ করে যাওয়ার প্রবল মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যায় এবং মাঝে মাঝে সে বড় কিছু করে ফেলে। যারা সিরিয়াস উদ্যোক্তারা যেকোন কিছু করতে প্রস্তুত থাকে যাই হোক না কেন। একটি বিষয়ে তারা ধাপে ধাপে এগিয়ে যায়, তারা কখনও একসাথে সবকিছু করতে গিয়ে ঝামেলা তৈরি করেনা।

৬. লক্ষ্য
লক্ষ্য থাকা একজন স্টার্ট আপ নেতার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। তবে আসল পরীক্ষা হল সেই লক্ষ্যকে বাস্তবে এমনভাবে রূপ দেওয়া যাতে আপনার আশপাশের লোকেরাও আপনার লক্ষ্যের উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে। একটি সঙ্গতিপূর্ণ বার্তা ও প্রতিনিয়ত নব শক্তি নিয়ে এগিয়ে গেলে অন্যরাও আপনার স্বপ্নকে আরো ভালভাবে বুঝতে পারবে।

৭. ভয়ের ভারসাম্য
প্রতিটি স্টার্ট আপ নেতাই ভিন্ন, তাই একটি নির্দিষ্ট গুণাবলী হয়ত সবার জন্য প্রযোজ্য হবেনা। সবার মাঝেই কোন না কোন ভয় কাজ করে, ব্যর্থ হবার ভয়। কিন্তু তারপরও ভয় এবং আত্মবিশ্বাসের ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। নেতাদের সব সময় সজাগ ও বাস্তব সম্মত থাকতে হবে একই সাথে তাদের লক্ষ্য সঠিক হবে কিনা সে ব্যাপারেও ধারণা রাখতে হবে।

৮. মালিকানা
যেকোন ইন্ডাস্ট্রিতে ভাল নেতারা উদ্ভূত পরিস্থিতিকে তাদের কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে দেয় না। এ ধরনের নেতারা মনে করে তাদের সাফল্য তাদের হাতে এবং পারিপার্শ্বিক চাপগুলোকে তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যখন কোন কিছু তাদেরকে পেছনে ঠেলে দেয়, ভাল নেতারা ধৈর্য ধারণ করে এবং ঐ পরিস্থিতিকে নিজের করে নিয়ে তা জয় করে।

৯. ইতিবাচকতা
ভাল নেতাদের একটি ইতিবাচক মনোভাব থাকে। যদি আপনার মধ্যে ইতিবাচকতা না থাকে তাহলে আপনি উদ্যোক্তা হতে পারবেন না। বিজনেসে চড়াই-উৎরাই থাকবেই, যদি বিজনেসের নেতা সদা ইতিবাচক থাকে, তাহলে সে তার সাথে থাকা অন্যদের মাঝেও সেই ইতিবাচক মনোভাব বিস্তার করতে পারবে।

১০. সেলসম্যানশিপ
এর মানে হল নেটওয়ার্কিং করা এবং পণ্য বিক্রি করার সক্ষমতা থাকা। ভাল স্টার্ট আপ নেতারা তাদের সব সময় সেলসের মাঝেই থাকে। কর্মচারীরা যাতে তাদের জন্য কাজ করে, বিনিয়োগকারীরা যাতে তাদের পণ্যে বিনিয়োগ করে, অন্যরা যাতে তাদের সাথে অংশীদারিত্বে আসে, গ্রাহকরা যাতে তাদের পণ্য কেনে – এসব কিছু নিয়েই তারা সদা ব্যস্ত থাকে।

১১. আত্ম-সচেতনা
ভাল নেতারা তাদের নিজেদের ব্যাপারে সব সময় সচেতন, তারা তাদের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে ভালভাবে অবগত থাকে। ভাল স্টার্ট আপ নেতা বিজনেস গ্রোথের বিষয়ে সৎ থাকার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী থাকে। যখন আপনি জানবেন কোন ক্ষেত্রে আপনার সাহায্য দরকার তখন আপনি বুঝবেন কোন ধরনের কর্মচারীকে আপনার টিমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং কোন ধরনের কৌশলগত অংশীদার থাকলে আপনার বিজনেসের জন্য ভাল হবে।

১২. শোনার ক্ষমতা
বেশিরভাগ বিজনেস প্রেক্ষাপটে মনযোগ দিয়ে কথা শোনাকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। বর্তমানের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে যার গলার জোর বেশি তার কথাই বেশিরভাগ সময়ে শুনতে পাওয়া যায়। তবে ফিডব্যাক দেওয়া এবং শোনা কথাকে কাজে লাগানোর মাঝেই একজন ভাল নেতা উঠে আসে। আপনার কর্মচারীরা আপনার প্রশংসা করবে কারণ আপনি তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন এবং আপনার অংশীদাররাও আপনার উপর আস্থা রাখতে শুরু করবে।

Similar Posts

1 Comment

  1. সঠিক বিষয়গুলোই তুলে ধরেছেন। এই গুলো আর্জনের জন্য চাই দীর্ঘ দিনের সাধনা। ব্যবসায় ও অর্থনীতি বিষয়ক ব্লগ http://bconnect24.com এ আপনারা আমিন্ত্রিত।

Leave a Reply