এই ৪টি সাধারণ (তবে খুব সহজেই সংশোধনযোগ্য) ভুলের কারণে হয়ত আপনার গ্রাহকেরা আপনার উপর তাদের বিশ্বাস হারাতে পারে।

 

সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাহকেরা আপনাকে বিশ্বাস না করতে পারলে তারা আপনার পণ্য কিনবে না। দুভার্গ্যজনক হলেও সত্যি, অনেক কোম্পানি (এবং তাদের সেলস টিম) কিছু মৌলিক ভুল করে বসে যার ফলে গ্রাহকেরা আপনার উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলে। এর মধ্যে এই ৪টি ভুল সচরাচরই সংঘটিত হয়ে থাকেঃ

 

.মিথ্যা বলার মধ্য দিয়েই আপনি সম্পর্কের সূত্রপাত করেছেন

হাজার হাজার সেলস লেটার আর ইমেইল অথবা অন্য কিছু যার শুরু হয় এমনভাবে “আমি আমার কন্ট্যাক্টস ঘাটছিলাম এবং কল দেওয়ায় কথা ভাবছিলাম…” অথবা “আপনি আপনার বর্তমান পণ্য সরবরাহকারী নিয়ে অখুশি তা জানতে পেরে আমি দুঃখিত”।

গ্রাহকেরা বোকা নয়। তারা জানে যে সেলস লেটার হল তোষামোদের মাধ্যম আর অন্য সরবরাহকারী নিয়ে যে তারা অখুশি এই কথা জেনে আপনি যে খুশি হয়েছেন সেটা তারা ভালভাবেই বুঝতে পারে। যখন আপনি ইনিয়ে বিনিয়ে কিছু বলবেন, তখন গ্রাহকেরা আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা সন্দেহের চোখে দেখবে।

 

সমাধান: সব সময় সত্য কথা বলুন। যেমনঃ “আমি নতুন গ্রাহকদের সন্ধান করছি” অথবা “আপনি যে আপনার পণ্য সরবরাহকারী নিয়ে অখুশি এ ব্যাপারে আমি যে খুশি হয়নি এমন ভান আমি করব না”। মূল কথা হল, মিথ্যা বলার দরকারটা কী? সত্য বলায় আপনার লজ্জিত হওয়ার কোন কারণ নেই।

 

. আপনি অবিশ্বাস্য সব দাবি করেছেন

প্রায় সব কোম্পানিই দাবি করে তারা স্বল্প মূল্যে সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে থাকে। যদি লজিকালি এটি সম্ভব (যদি না আপনার প্রতিধন্ধিরা উচ্চ মূল্য বহাল করার চিন্তাভাবনা করে থাকে) তবে বাস্তবে এমনটি খুব বেশি দেখা যায় না। এমনকি মাঝে মাঝে যদি এই দাবিটি সত্যও হয়, তাও গ্রাহকদের মাঝে একটু হলেও সন্দেহ তৈরি করবে এবং এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। ইন্টারনেটের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ রাখা সম্ভব এবং অধিকাংশ গ্রাহকেরাই কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

 

সমাধান: আপনার পণ্যের অভিনবত্ব (uniqueness) খুঁজে বের করুন এবং আর্থিকভাবে এই অভিনবত্ব গ্রাহকের জন্য কী সুফল বয়ে আনবে তা জানিয়ে দিন। যদি আপনার পণ্যের দাম কম না হয়, তাহলে এর বাড়তি খরচ যে আসলেই কাজে লাগবে তা দেখিয়ে দিন।

 

. আপনি তথ্য উপাত্তের পরিবর্তে মতামতের উপর নির্ভর করেছেন

আপনি মনপ্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করতে পারেন যে আপনার কোম্পানি ও আপনার পণ্য বা সেবা সবার থেকে সেরা কিন্তু সেটা আপনার একান্ত অভিমত। সবার কাছে আর কিছু থাকুক বা না থাকুক, একটা মতামত কিন্তু ঠিকই থাকে। যখন আপনি নিজের বড়াই করবেন এবং সঠিক তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী অবিশ্বাস্য হিসেবে চিহ্নিত সব দাবি করবেন তখন গ্রাহকদের মধ্যে সন্দেহের উদ্রেক হবেই। তারা ধরে নেবে যে বড় বড় দাবি করে আপনি হয়ত আপনার কোম্পানির কোন দুর্বলতা ঢাকার চেষ্টা করছেন।

 

সমাধান: নিজের পণ্যের তারিফ কখনও করবেন না। যদি আপনার মনে হয় আপনার পণ্যের একটি অভিনবত্ব (uniqueness) তুলে না ধরলেই নয়, তাহলে অন্য যারা সেই পণ্যটি ব্যবহার করেছেন তাদের সাহায্যে তা তুলে ধরুন। সতর্কতাঃ তবে নাম না জানা তারিফকারীদের যে কোন মূল্য নাই সেটা গ্রাহকেরা ভাল করেই জানে।

 

. আপনি বিক্রি সম্পন্ন করতেই ব্যস্ত ছিলেন

যখন পণ্য বিক্রি করাই আপনার মূল লক্ষ্য তখন গ্রাহকেরা তা বুঝতে পারে এবং তাতে বিরক্ত হয়। যদিও আপনার আর আপনার কোম্পানির জন্য পণ্য বিক্রি থেকে আয় করা গুরত্বপূর্ণ, আপনার উচিত হবে গ্রাহকের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া। তা না হলে তারা আপনাকে অন্যদের মতই ধরে নেবে। গ্রাহকেরা জানে যে আপনার পণ্য বিক্রি করতে হবে। তবে, তারা আশা করে যে আপনি কিছু সময়ের জন্য হলেও আপনার স্বার্থ ভুলে যান এবং যদি ঐ পণ্যটি কিনে গ্রাহক লাভবান নাও হয় আর সেলসটি যদি আপনার হাতছাড়াও হয়ে যায়, তাহলে এ ব্যাপারে যা সত্য তা জানাবেন।

 

সমাধান: সকল গ্রাহককে সল্প মেয়াদের সম্ভাবনা হিসেবে না দেখে তাদেরকে দীর্ঘ মেয়াদের বিনিয়োগ হিসেবে দেখার চেষ্টা করুন। “এখন পণ্য ক্রয় করার সঠিক সময় নয়” – গ্রাহকদেরকে এটি বলার মাধ্যমেই হয়ত আপনি আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করবেন এবং গ্রাহকের সাথে একটি ভাল সম্পর্ক তৈরি করতে পারবেন।

 

[অনুবাদ]

 

Similar Posts

Leave a Reply